ফেনী কারাগারের জেলার দিদারুল আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ফেনী জেলা কারাগারে পৃথক কনডেম সেল ও ফাঁসির মঞ্চ না থাকায় নুসরাত হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামিদের কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ফেনী জেলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের জানান, ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ১৬ আসামির মধ্যে ১২ জনকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো জানান, মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার ১৩ নভেম্বর (বুধবার) আদালতে নুসরাতকে যৌন হয়রানির মামলার দিন ধার্য আছে। এজন্য আদালতের কার্যক্রম শেষে তাকে ওই দিনই কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হবে। আর বুধবার মহিলা আসামি কামরুন নাহার মনি ও উম্মে সুলতানা ওরফে পপিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হবে। রুহুল আমিনকেও ১৩ নভেম্বর কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হবে।
নুসরাত হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, মাদ্রাসার ছাত্র নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, ছাত্র সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদরাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি রুহুল আমীন ও মাদ্রাসার সাবেক ছাত্র মহিউদ্দিন শাকিল।
২৪ অক্টোবর আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলার ১৬ আসামির সবাইকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ। আসামিদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত।
ফেনী জেলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের আরো বলেন, যেসব আসামির দীর্ঘমেয়াদি শাস্তি ও মৃত্যুদণ্ড হয়, সেসব আসামিদের জেলা কারাগারে না রেখে নিরাপত্তাজনিত কারণে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর জন্য কারাবিধিতে নির্দেশনা রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় কারাগারগুলোতে জনবল ও কনডেম সেলের সংখ্যা বেশি। তাদের পরিচালনার জন্য যা যা প্রয়োজন সব সেখানে রয়েছে। ফেনী জেলা কারাগারে ফাঁসির কোনো মঞ্চ নেই, সেখানে সব রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৯
এসএইচডি/জেডএস