দেখা যায় ট্রেনের যাত্রীদের কোথাও হাত, পা এমনকি মাথাবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে আছে। কিছু কিছু স্থানে রক্ত পড়ে রয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, উদয়ন এক্সপ্রেসের পেছনের তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে ছিটকে গেছে। বগির ভেতর থেকে উদ্ধারকারীরা একের পর পর মরদেহ বের করে আনছে। নিহতদের অনেকেরই শরীর বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কারো পা, হাত, মাথা শরীর থেকে আলাদা হয়ে বিভিন্ন স্থানে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া মন্দভাগ এলাকার বাসিন্দা মোশারফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, একটা বিকট শব্দ শুনে আমরা ঘর থেকে বের হয়ে ঘটনাস্থলে এসে দেখি তিনটি বগি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রয়েছে। কাছে গিয়ে দেখি মানুষের হাহাকার-কান্নার শব্দ। আমরা ৮-১০ জন যুবক একত্র হয়ে ট্রেনের জানালার ভেতর দিয়ে ঢুকে যায়। তারপর আহত-নিহতের বের করে বাইরে নিয়ে আসি।
এলাকার স্থানীয় গাড়িচালক বাপ্পি মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে আমার দু’জন চালক ও পিকআপ ভ্যান নিয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসি। প্রথমে আমরা স্থানীয় লোকজনরাই হতাহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই।
কাইয়ুমপুর এলাকার বাসিন্দা মানিক মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, এক বন্ধুর ফোন পেয়ে আমার ঘুম ভাঙে। পাঁচ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে চলে আসি। এসে দেখি ট্রেনের অনেক যাত্রী ছিটকে পড়ে রয়েছে। রক্তমাখা মানুষ দেখে দ্রুত অটোরিকশা ও পিকআপ ভ্যানের মাধ্যমে তাদের হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
এছাড়াও এলাকার যুবক এমরান, নাঈম ও আলামিন বলেন, আমরা মসজিদের মাইকে মুয়াজ্জিনের ঘোষণা শুনে ঘর থেকে বের হয়ে আসি। এ ভয়াবহ দৃশ্য দেখে আমাদের মধ্যে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এত মরদেহ একসাথে কোনোদিন দেখিনি। আহতদের কান্নার শব্দ শুনে মন মানিয়ে রাখতে পারলাম না। দ্রুত তাদের উদ্ধার করার চেষ্টা করি।
পরে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজন এসে আমাদের সঙ্গে উদ্ধার কাজে যোগ দেন।
বেঁচে যাওয়া তূর্ণা নিশীথার যাত্রী ফজল মিয়া জানান, আমাদের ট্রেন চালকের অবহেলার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
** তূর্ণা এক্সপ্রেসের চালক-গার্ডসহ তিনজন সাময়িক বরখাস্ত
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৯
আরএ