চলতি মৌসুমে এ আখ মাড়াই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন নাটোর-২ ( সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল। এই লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল ১০টার সময় বাংলানিউজকে এতথ্য জানিয়েছেন নাটোর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এফ এম জিয়াউল হক।
তিনি বলেন, ৩৬তম আখ মাড়াই মৌসুম সফল করতে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কারখানার প্রয়োজনীয় মেরামতসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কাজ শেষ করা হয়েছে। চিনিকলের নিরবচ্ছিন্ন মাড়াই কাজ অব্যাহত রাখতে ইতোমধ্যে কারখানার বয়লারে আগুন দেওয়া হয়েছে।
মিলগেট ছাড়াও ৫১টি আখ ক্রয় কেন্দ্রের ক্রয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে কেন্দ্রের আঙিনা প্রস্তুত ও ডিজিটাল ওজন মেশিন সংযোজন করা হয়েছে। জমিতে আখের জরিপ কাজ শেষে উৎপাদিত আখের পরিমাণ বিবেচনা করে ই-পূর্জি ও ই-গেজেটের মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে আখ ক্রয় করা হবে।
এছাড়া মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে কৃষকদের আখের দাম পরিশোধ করা হবে।
লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আখের সরবরাহ পাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আসন্ন মৌসুমে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সক্ষম হবে চিনিকল।
নাটোর চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) মো. রুস্তম আলী বাংলানিউজকে জানান, চিনিকল এলাকার আখ চাষিদের প্রণোদনা দিতে পাঁচ কোটি ৪৪ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়। এ ঋণের টাকায় পাঁচ হাজার ২৭৮ জন কৃষক তাদের জমিতে আখ উৎপাদনে বীজ ও সার সংগ্রহ করেছেন এবং জমিতে সেচ দিয়েছেন। চিনিকলে কৃষকদের বিক্রয়লব্ধ আখের দাম থেকে এ ঋণের টাকা সমন্বয় করা হবে।
নাটোর চিনিকল এলাকায় চলতি মৌসুমে ১৪ হাজার ১৫৩ একর জমিতে দুই লাখ ৫৪ হাজার টন আখ উৎপাদিত হয়েছে। চিনিকলের আটটি সাব-জোনের ৫১টি সেন্টারের অধীন কৃষকদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও মানসম্পন্ন আখ চিনিকলে সরবরাহের জন্যে অনুরোধ জানিয়ে প্রচারণা চালানো হয়েছে। অবৈধভাবে পাওয়ার ক্রাশারে গুড় উৎপাদনে আখ সরবরাহ না করার জন্যেও পোস্টার ও লিফলেটের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গত ২৭ জুলাই প্রকাশিত সরকারের প্রজ্ঞাপন এস আর ও নম্বর ২৫০-আইন/২০১৯ নাটোর চিনিকল এলাকায় ১ জুলাই ২০১৯ থেকে আগামী ৩১ মে ২০২০ পর্যন্ত পাওয়ার ক্রাশারে আখ মাড়াই ও গুড় তৈরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে চিনিকল এলাকায় শতাধিক পাওয়ার ক্রাশারে আখ মাড়াই করে গুড় উৎপাদন করা হচ্ছে।
এসব অবৈধ পাওয়ার ক্রাশার বন্ধে চিনিকল কর্তৃপক্ষ নাটোরের জেলা প্রশাসন ও নলডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের তিনটি অভিযান পরিচালনা করেছে। এসব অভিযানে অন্তত ১৮টি পাওয়ার ক্রাশার জব্দ এবং বেশ কয়েকজনকে জেল-জরিমানা করা হয়। আগে চিনিকল এলাকাতে ১৩৬টি পাওয়ার ক্রাশার চললেও উদ্বুদ্ধকরণ ও অভিযানের ফলশ্রুতিতে বর্তমানে ৮০টি পাওয়ার ক্রাশার চলছে বলে জানান তিনি।
নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, সরকারের এই ভারী শিল্পকে বাঁচাতে এলাকায় পাওয়ার ক্রাশার বন্ধে প্রশাসনিক অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৯
আরএ