ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত শিশু হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলা গ্রামের ইয়াছিন আলমের (১২) বাড়িতে গিয়ে এই শোকাবহ চিত্র দেখা যায়। খবর শুনে শিশু ইয়াছিনের বাড়িতে ছুটে এসেছেন তার স্কুলের সহপাঠীসহ আত্মীয়-স্বজন ও আশপাশের লোকজন।
কান্নারত ইয়াছিনে দাদী পারুল বেগম বলেন, চট্টগ্রামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সোমবার (১১ নভেম্বর) দিবাগত রাতে উদয়ন ট্রেনে করে রওনা দেন। রাতের যাত্রা হওয়ায় ছেলেকে নিতে চাননি। কিন্তু কিছুতে তা মানছিলনা শিশু ইয়াছিন। বায়না ধরে বাবার সঙ্গে থাকে নিতেই হবে। এক পর্যায়ে ছেলেকে নিয়েই বাড়ি থেকে বের হন আলমগীর। এরপর মঙ্গলবার ভোরে খবর আসে ট্রেন দুর্ঘটনায় ইয়াছিন নিহত ও তার বাবা আলমগীর আহত হয়েছেন। এরপর থেকে হাউমাউ করে কান্না করতে থাকেন ছেলেহারা মা হাছিনা বেগম। পরে তিনি ছেলের মরদেহ ও আহত স্বামীকে দেখতে ছুটে যান ঘটনাস্থলে।
বিকেল ৩টার দিকে নিহত ইয়াছিনের নিকটাত্মীয় অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান সজল খান জানান, মরদেহ নিয়ে স্বজনরা রওনা দিয়েছে। হাত-পা সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত বাবাও সঙ্গে রয়েছেন। বিকেল ৫টায় জানাজার নামাজ শেষে ইয়াছিনের দাফন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
স্বজল খান আরো জানান, ইয়াছিন স্থানীয় বহুলা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল। তার জান্নাত আক্তার নামে আরেক বোন রয়েছে। সেও ভাইকে হারিয়ে নির্বাক।
সোমবার (১১ নভেম্বর) রাত ৩টার দিকে কসবা উপজেলার মন্দবাগ এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী ‘তূর্ণা নিশীথা’র সঙ্গে সিলেট থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে যাত্রা করা ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (বিকেল সাড়ে ৪টা) ১৬ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে শতাধিক। নিহতদের মধ্যে হবিগঞ্জ জেলার ১৬ জনের নাম-পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- হবিগঞ্জ শহরতলীর আনোয়ারপুরের আলী মো. ইউনুছ (৩০), বহুলা গ্রামের আলমগীর আলমের ছেলে ইয়াছিন আলম (১২), চুনারুঘাট উপজেলার উলুকান্দি পশ্চিম তালুকদার বাড়ির ফটিক মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া (২২), একই উপজেলার পীরের গাঁওয়ের আব্দুল হাসিমের ছেলে সুজন মিয়া (২৫), বানিয়াচং উপজেলার মর্দন মুরত গ্রামের ইউসুফ মিয়ার ছেলে আল আমিন মিয়া (৩৪) ও একই উপজেলার টাম্বলী টুলা গ্রামের সোহেল মিয়ার মেয়ে আদিবা আক্তার (৪)।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৯
এসএইচ