মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যায়ক্রমে মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হয়। দিনভর শোকার্ত মানুষের আহাজারিতে ভারী ছিল পুরো এলাকা।
নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে ছুটে আসা পাগলপায় মানুষ প্রিয়জনের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ দেখে মূর্ছা গেছেন বার বার। প্রথম দফায় উদ্ধার অভিযানের পরই মরদেহগুলো নিয়ে রাখা হয় বায়েক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে। খোলা হয় তথ্য কেন্দ্র। স্বজন হারানো মানুষজন সেখানে গিয়ে প্রথমে খুঁজেছেন আহতদের তালিকায়, সেখানে না পেলে পুলিশের মরদেহবাহী ব্যাগ খুলে দেখানো হত। এভাবেই দিনভর স্বজনদের খুঁজেবেড়ায় প্রিয়জনহারা মানুষগুলো। সব শেষ সেই ১৬ জনেরই পরিচয় শনাক্ত করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ দিকে জেলা সদর হাসপাতালের অভিভাবকহীন ছোট মেয়ে মহিমার স্বজনদের পরিচয়ও পাওয়া গেছে সেই মরদেহের সারিতে। কাকলী বেগম (২৮) নামে এক নারীর মরদেহের পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পরই মহিমার পরিচয় জানা যায়। মহিমার বাবার নাম মাইনুদ্দিন। তিনি ঢাকার একটি হোটেলে করেন।
নিহতরা হলেন- মৌলভীবাজারের জাহেদা খাতুন (৩০), চাঁদপুরের কুলসুম বেগম (৩০), হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের আল-আমিন (৩০), হবিগঞ্জের আনোয়ারপুরের আলী মোহাম্মদ ইউসুফ (৩২), চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের পশ্চিম রাজারগাঁওয়ের মুজিবুল রহমান (৫৫), হবিগঞ্জের বহুলার ইয়াছিন আরাফাত (১২), চুনারুরঘাটের তিরেরগাঁওয়ের সুজন আহমেদ (২৪), হবিগঞ্জের বানিচংয়ের আদিবা (২), হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের সোহামনি (৩), চাঁদপুরের উত্তর বালিয়ার ফারজানা (১৫), চাঁদপুরের হাইমচরের কাকলী (২০), হবিগঞ্জের রিপন মিয়া (২৫), চাঁদপুরের হাইমচরের মরিয়ম (৪), নোয়াখালীর মাইজদির রবি হরিজন (২৩), চাঁদপুর সদরের ফারজানা (১৫), হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের পিয়ারা বেগম (৩২)।
সোমবার দিনগত রাত ৩টার দিকে কসবা উপজেলার মন্দবাগ এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী ‘তূর্ণা নিশীথা’র সঙ্গে সিলেট থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে যাত্রা করা ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (বিকেল সাড়ে ৪টা) ১৬ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে শতাধিক।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৯
এসএইচ