মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল ১১টা থেকে উপজেলার মাধবপুর জোড়ামণ্ডপ এবং আদমপুর সানাঠাকুর মণ্ডপে রাস উৎসব ও রাসমেলা শুরু হয়েছে। গোপরাস বা রাখুয়ালের মাধ্যমে এই উৎসবের সূচনা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে নানা ঐতিহ্যবাহী সাজে মেতেছে মণিপুরী পাড়া। রাতভর বৈষ্ণব সাহিত্যের রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলার নৃত্যগীতাভিনয় রাসলীলার মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।
মূল রাসলীলা রাত ১১টা থেকে শুরু হয়ে পরদিন ভোর পর্যন্ত চলবে। বাঁশ ও কাগজ কেটে বিশেষ কারুকাজে রাসের মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। মণ্ডপের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে বসে রাসধারী বা রাসের গুরু, সূত্রধারীরা এবং বাদকরা। পাশাপাশি তিনটি মণ্ডপে আনুমানিক প্রায় ২০০ জন কিংবা ততোধিক সংখ্যক তরুণী এ রাসলীলায় অংশ নিয়ে থাকে। রাসের সাধারণ ক্রম হচ্ছে- সূত্রধারী কর্তৃক রাগালাপ ও বন্দনা, বৃন্দার কৃষ্ণ আবাহন, কৃষ্ণ অভিসার, রাধা ও সখীদের অভিসার, রাধা ও কৃষ্ণের সাক্ষাৎ ও মান-অভিমান, ভঙ্গীপারেং, রাধার কৃষ্ণ-সমর্পণ, যুগলরূপ প্রার্থনা এবং আরতি ইত্যাদি।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৭৬৯ খ্রিস্টাব্দে রাজা ভাগ্যচন্দ্র সিংহের আয়োজনে মণিপুরীরা প্রথম রাসলীলা পালন করেন। সেসময় মণিপুরী রাজা গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মমতে মোহাবিষ্ট রাজা স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে কন্যা লাইরোবিকে রাধার ভূমিকায় অবতীর্ণ করে রাস অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিলেন। মৈথিলি ও ব্রজবুলি ভাষার বিভিন্ন পদের মণিপুরী সঙ্গীতের নিজস্ব গায়কী ও মুদ্রা-পদবিক্ষেপে জটিল এবং ধ্রুপদি ধারার এই গীতিনৃত্যধারায় তা পালন করা হয়েছিল। মণিপুরীদের আদিভূমি ভারতের মণিপুর থেকে এই রাস উপমহাদেশের তথা সমগ্র বিশ্বের নৃত্যকলার মধ্যে একটি বিশেষ স্থান করে দিয়েছে। যদিও সেটি একটি ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান, কিন্তু তার নৃত্যশৈলী বরাবর সব ধর্ম ও জাতের মানুষকে আকর্ষণ করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৯
এসএ