মহিষামুড়ি ধারাপাড় গ্রাম বয়ে যাওয়া সতিনদীর ওপর দিয়ে কাকিনা-আমিনগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ সচল করতে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে পাঁচ বছর আগে ভয়াবহ বন্যায় এটি ভেঙে যায়।
সরকারিভাবে নতুন করে ব্রিজটি নির্মাণ না করায় এখানকার ১৫ থেকে ২০ গ্রামের মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তারা নিজেদের উদ্যোগে সাঁকো করলেও এটি দিয়ে কোনো রকমে একটি রিকশা পার হতে পারে। এর সঙ্গে যাত্রী থাকলেই ঘটে বিপত্তি। রোগীসহ একটি বাহন বা খালি অ্যাম্বুলেন্সের পার হওয়ার তো প্রশ্নই উঠে না।
পণ্য বেচাকেনার ক্ষেত্রে ঐতিহ্যবাহী কাকিনা হাট এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড়। এটি চরাঞ্চলের কাকিনা মহিষামুড়ি, হাজিরহাট, চর বৈরাতি, আউলিয়ারহাট, কাঞ্চনশ্বর,বাগেরহাট, কানারহাট, বিনবিনিয়ার চরসহ প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষের উৎপাদিত পণ্য বেচার মাধ্যম। অথচ এই হাটে পণ্য নিয়ে পৌঁছাতে হলে একটি ব্রিজের কারণে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পথ অতিরিক্ত পাড়ি দিতে হয় তাদের। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে অঞ্চলটির উন্নয়ন। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি এবং ব্যবসাও।
এছাড়া ব্রিজটির কারণে এলাকাটির ছাত্রছাত্রীরাও পড়েছে বিপাকে। ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পার হয় এখানকার কাকিনা মহিমারঞ্জন স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়, কাকিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাকিনা শিশু নিকেতন, কাকিনা মাদ্রাসা ও কাকিনা উত্তর বাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী।
মহিষামুড়ি ধারাপাড় এলাকার আজহার আলী বাংলানিউজকে বলেন, বন্যায় ভেঙে যাওয়ার প্রথম বছর কলাগাছের ভেলায় করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েসহ সর্বসাধারণ চলাচল করেছি। চার বছর ধরে নিজেরাই বাঁশ-কাঠ ও অর্থ সংগ্রহ করে সাঁকো তৈরি করেছি। সরকারি আমলা ও জনপ্রতিনিধিদের একাধিকবার বলেও বাঁশ-কাঠের টাকাও পাইনি। তাদের দুর্ভোগ দেখতে ডাকলেও আসেননি। আমরা সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করি।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, ব্যস্ত সড়কের ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার পর স্থানীয়রা সাঁকো তৈরি করে কোনো রকমে যোগাযোগ সচল করেছেন। গতবছর এই সাঁকোর একটা অংশ মেরামত করে দিতে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ গিয়েছিলাম এবং এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ফোনে অবগত করি। তারা নতুন ব্রিজ নির্মাণে প্রকল্প দেওয়ার কথা দিলেও আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তবে দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণে এলজিইডি ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করার আশ্বাস দেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৯
টিএ