কিন্তু শত চাপ দেওয়ার পরেও বিয়ের পিঁড়িতে বসতে রাজি হননি সেই ব্যবসায়ী। অবশেষে স্ত্রীর মর্যাদা পেতে এবং ছোট ভাইয়ের চাকরির জন্য দেওয়া ৫০ হাজার টাকা ফেরত নিতে সেই ব্যবসায়ীর বাড়িতে গেলে পরিবারের সদস্যরা তাকে ও তার মাকে বেদম মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
জানা যায়, জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভানাই কুশলিয়া গ্রামের মৃত আবুল কালাম আজাদের মেয়ে জেসমিন আক্তার জয়পুরহাট সরকারি কলেজে বিএ ২য় বর্ষের ছাত্রী থাকাকালীন ২০১৬ সালের ১৯ নভেম্বর পরিচয় হয় জয়পুরহাট শহরের আদর্শপাড়ার বাসিন্দা ওসমান আলীর ছেলে রেজাউল ইসলাম রেজার সঙ্গে। জেসমিনের বাড়ির পাশে মধুপুর গ্রামে একটি ভাড়া করা শেডে মুরগির ব্যবসা করার সুবাদে রেজা ওই মেয়েটির বাসায় নিয়মিত যাতায়াত শুরু করেন। একপর্যায়ে নিজেকে অবিবাহিত ও বড় মাপের ব্যবসায়ী দাবি করে বিয়ের আশ্বাসে তার সঙ্গে মেলামেশা শুরু করেন। তাদের অবাধ চলাফেরায় গ্রামবাসীরা জানতেন তারা স্বামী-স্ত্রী।
এরই মাঝে জেসমিন তাকে বার বার বিয়ের চাপ দিলে তিনি বিভিন্ন ধরনের টালবাহানা করতে থাকেন এবং এভাবেই কেটে যায় দীর্ঘ প্রায় ৪টি বছর। সর্বশেষ রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে জেসমিন তার বিধবা মা রশিদা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে বিয়ের দাবি এবং ভাইয়ের কাছ থেকে নেওয়া ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করতে আদর্শ পাড়ায় রেজার বাড়িতে যান। সেখানে যাওয়ার পর রেজার পরিবারের সদস্যরা বেদম মারধর করে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেন।
এ ঘটনায় জেসমিনের প্রতিবেশী আয়ুব আলীসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, একটি এতিম মেয়ের সঙ্গে মিথ্যা আশ্বাসে বছরের পর বছর অবৈধভাবে বসবাস করার বিষয়টি সহজে মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এ ব্যাপারে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সার্জারি বিভাগে ভর্তি থাকা ভুক্তভোগী তরুণী জেসমিন আক্তার জানান, আজ সকালে রেজার বাড়িতে গেলে তার ১ম স্ত্রী রোজী, ছেলে রাসু, মা রেজিয়া বেগম ও শ্যালক শফিকুল ইসলাম আমাদের লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে আমরা হাসপাতালে ভর্তি হই।
সুস্থ হয়ে এ বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করবেন বলে জানান জেসমিন।
জেসমিন আক্তার আরও জানান, এর আগে চলতি মাসেই বিষয়টি জয়পুরহাট সদর থানার ওসি শাহরিয়ার খানকে অবগত করা হলে তিনি আমাকে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন।
জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মীর মুবিনুল ইসলাম জানান, জেসমিনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, তবে খুব গুরুতর নয়। আশা করছি, দু-এক দিনের মধ্যেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত রেজাউল ইসলাম রেজার মোবাইল ফোনে বার বার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
জয়পুরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহরিয়ার খান জানান, লিখিতভাবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৯
আরএ