ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

যশোরে পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তি, বাড়তি চাপ ট্রেনে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
যশোরে পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তি, বাড়তি চাপ ট্রেনে

যশোর: সড়ক আইন ২০১৮ সংশোধনসহ আইন প্রত্যাহার দাবিতে যশোরের ১৮ রুটে বাস চলাচল দু’দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার কোনো বাসই চলছে না। এতে যাত্রীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। উপায় না পেয়ে এ অঞ্চলের যত্রীরা যাতায়াত করছেন ট্রেনে। 

দু’দিনই যশোর ট্রেন স্ট্রেশনে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।  

শ্রমিক নেতাদের দাবি, শাস্তির খড়গ নিয়ে রাস্তায় নামতে চাইছে না শ্রমিকরা।

এজন্য স্বেচ্ছায় কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। আর বৈধ কাগজপত্রের চালকরা বলছেন, অবৈধ কাগজপত্রের চালকরা মাঠে নামতে পারছে না। তাই শ্রমিক নেতাদের ইন্ধনে তারা ধর্মঘট পালন করছে। পুলিশ প্রশাসন বলছে, শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে ধর্মঘট না হওয়ায় আলোচনাও ফলপ্রসূ হচ্ছে না। তবে আলোচনা চলছে।  

জানা যায়, সড়ক আইন ২০১৮ সংশোধনসহ দশ দফা দাবিতে রোববার সকাল থেকে যশোর অঞ্চলের ১৮ রুটে স্বেচ্ছায় কর্মবিরতি শুরু করেন পরিবহন শ্রমিকরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজারো মানুষ। সোমবার বেলা ১১টার দিকে বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা কয়েকটি পরিবহন আটকে দেন শ্রমিক ও শ্রমিক নেতারা। বৈধ কাগজপত্রের চালকরা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামতে চাইলেও বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন।  

ওইসব গাড়ির চালকদের দাবি, শ্রমিক নেতারা শ্রমিকদের মাঠে নামিয়ে জিম্মি করছে। এজন্য বৈধ কাগজপত্র থাকলেও অনেক চালক নামতে পারছে না।

বাড়চি চাপ ট্রেনেশহরের কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালে একাধিক যাত্রী বলেন, ঘোষণা ছাড়াই পরিবহন ধর্মঘট চলছে। অথচ কেউ দায় নিচ্ছে না। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া উচিত নয়। বৈধ কাগজপত্র না থাকলে রাস্তার নামার দরকার নেই। কিন্তু যাদের বৈধ কাগজপত্র আছে, তারা কেন গাড়ি বন্ধ রাখবে। তাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করা হোক।

এদিকে রোববার দিনভর এ অচলাবস্থার পর রাতে যশোর কোতোয়ালি থানায় শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ঘণ্টাব্যাপী ধর্মঘট নিয়ে আলোচনা হলেও সিদ্ধান্ত নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসন সোমবার পরিবহন চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়েছে জানালেও শ্রমিকদের অবস্থান পরিষ্কার নয়।  

যশোর জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক সমিতির সভাপতি মামুনূর রশীদ বাচ্চু বাংলানিউজকে বলেন, বৈধ কাগজপত্রের গাড়ি ও চালকদের বাধা দিচ্ছে না। ৯০ শতাংশ চালক রাস্তায় নামছে না। ফলে বাকি ১০ শতাংশ চালক বিবেকের তাড়নায় মাঠে নামেনি। সবাই স্বেচ্ছায় কর্মবিরতি পালন করছে। যদি কেউ অভিযোগ করে, সেটি সঠিক নয়।

মামুনূর রশিদ বাচ্চু আরও বলেন, শ্রমিকদের কর্মবিরতি মালিক ও শ্রমিকদের কোনো সংগঠন ডাকেনি। ফাঁসির দড়ি সামনে নিয়ে শ্রমিকরা পরিবহনে কাজ করতে রাজি নয়। তাই তারা স্বেচ্ছায় কর্মবিরতি শুরু করেছে। এটা কোনো ইউনিয়ন বা ফেডারেশনের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি নয়। পরিবহন শ্রমিকরা ইচ্ছামতো কর্মবিরতি শুরু করেছেন।

যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক সাংবাদিকদের বলেন, রোববার রাতে বৈঠকে শ্রমিক নেতারা আশ্বাস দিয়েছিলেন সোমবার পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করবেন। কিন্তু এখানে শ্রমিক কিংবা বাস মালিক সংগঠন নয়, শ্রমিকরা স্বেচ্ছায় কর্মবিরতি পালন করছেন। ফলে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না শ্রমিক সংগঠনগুলো। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কঠোর হওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
ইউজি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।