কথাগুলো সিলেটের খাদিমনগর বিসিক শিল্প নগরীর ডিজিএম সৈয়দ বখতিয়ার উদ্দিন আহমদের। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সারা দেশে এখনো চাহিদার তুলনায় ৩ লাখ ২৭ হাজার মেট্রিক টন লবণ বেশি মজুদ রয়েছে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সিলেট ও হবিগঞ্জে লবণের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টায় ছড়ানো হয় গুজব। মানুষ পেঁয়াজের মতো লবণের দামও বাড়বে এমন আশঙ্কায় মুদি দোকানে ভিড় জমাতে থাকেন। এ সুযোগে অতিরিক্ত দামে ব্যবসায়ীরা লবণ বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন>> লবণের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা, হবিগঞ্জে আটক ৪
সৈয়দ বখতিয়ার উদ্দিন আহমদ বলেন, সারা দেশে লবণের বার্ষিক চাহিদা ১৬ লাখ ৫৭ হাজার মেট্রিক টন। এর বিপরীতে এ বছর উৎপাদন হয়েছে ১৮ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন। আর গত বছরের অবিক্রিত লবণ রয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টন। সব মিলিয়ে ১৯ লাখ ৮৪ হাজার মেট্রিক টন লবণ সরকারের হাতে মজুদ রয়েছে। বার্ষিক চাহিদার তুলনায় বেশি থাকা ৩ লাখ ২৭ হাজার মেট্রিক টন মিলিয়ে এখনো সাড়ে ৬ লাখ টন লবণ বেশি মজুদ রয়েছে সরকারের হাতে।
সৈয়দ বখতিয়ার উদ্দিন আহমদ বলেন, এর বাইরেও আরও ৪/৫ লাখ মেট্রিক টন লবণ পাইকারি ও খুচরা বাজারে রয়েছে। এ বিষয়টি জেলা প্রশাসনকেও অবহিত করা হয়েছে। গত কোরবানির ঈদের সময় চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে লবণ সংকট দেখিয়ে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করেন চট্টগ্রামের কতিপয় ব্যবসায়ী। এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে লবণ সংকট দেখিয়ে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশবাসীকে গুজব থেকে সজাগ থাকতে হবে।
আরও পড়ুন>> সিলেটের বাজারে লবণ সংকটের গুজব
পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির পর সোমবার সন্ধ্যা রাতে সিলেটের বাজারে লবণ সংকটের গুজব ছড়িয়ে বেশি দামে বিক্রি করা হয়। হঠাৎ করে লবণের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা ভিড় করেন বিভিন্ন দোকানে। নিমিষেই লবণ সংকটের বিষয়টি শহর থেকে গ্রামেও ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ব্যবসায়ীরা বেশি দামে লবণ বিক্রি শুরু করেন।
এদিন সিলেটের বাজারে ১শ’ থেকে দেড়শ’ টাকায় লবণ বিক্রি হয়েছে। ফলে লোকজন অতিরিক্ত দামে চাহিদার তুলনায় বেশি লবণ কিনে নেন।
আরও পড়ুন>> লবণের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা, ৪ জনের জেল-জরিমানা
এদিকে গুজবের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করেন ব্যবসায়ীরাও। বেশি মুনাফার আশায় অনেকে দোকানের লবণ সরিয়ে নিয়েছেন। এ অবস্থায় সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থা নগরের কালিঘাট পাইকারি বাজার তদারকিতে গিয়ে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পান।
এসময় নগরীর কালীঘাট এলাকায় একটি দোকান থেকে বিভিন্ন কোম্পানির ৫০ বস্তায় ৪৫০ কেজি লবণ জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় দোকান মালিককে ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেজবাহ উদ্দিন বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তাৎক্ষনিক জরিমানা আদায়ক্রমে মামলার নিষ্পত্তি হয়। এরপর নগরের কালিঘাট এলাকা থেকে ১ হাজার কেজি লবণ পরিত্যাক্ত অবস্থায় জব্দ করা হয়।
সদর উপজেলার এসিল্যান্ড সুমন্ত ব্যানার্জি বলেন, ওই দোকানি প্রতি বস্তা লবণ ২১৬ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছিলেন, এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুছা বাংলানিউজকে বলেন, যারাই গুজব ছড়াবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠিন অ্যাকশনে যাবে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৯
এনইউ/এইচএডি/