গত ৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠনের পর এখন পযন্ত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কোনো চাপ বা আন্দোলনের মুখোমুখি হতে হয়নি সরকারকে। সরকারের ওপর চাপ তৈরি হবে এমন কোনো কর্মসূচিও দিতে পারেনি সরকারবিরোধী কোনো রাজনৈতিক দল।
ছেলেধরা গুজব থেকে হত্যাকাণ্ড, ফেনীতে মাদ্রাসাছাত্রীকে পুড়িয়ে মারা, বরগুনায় কলেজছাত্রকে হত্যা, বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা, হঠাৎ করে পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন, সবশেষ লবণ সংকটের আতংক তৈরি করা হয়েছে। তবে, তাৎক্ষণিকভাবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশে লবনের কোনো ঘাটতি নেই। বর্তমানে ছয় লাখ মেট্রিক টনের বেশি লবণ মজুদ রয়েছে। পরিকল্পিতভাবে লবণ নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। লবণের দাম কেউ বাড়তি চাইলে এবং লবণ নিয়ে গুজব ছড়ানো হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, সরকারকে বিভিন্নভাবে বিব্রত করা ও বেকায়দায় ফেলার জন্য বিভিন্নভাবে চক্রান্ত হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বারবার গুজব ছাড়ানোসহ বিভিন্ন ধরনের সংকট তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটানো হয়েছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি দাম অস্বাভাবিক বাড়ানো হয়েছে। এই সংকট সরকার মোকাবিলা করার পর লবণ নিয়ে গুজব ছড়িয়ে আরেকটি কৃত্রিম সংকট তৈরির ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এসব পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত যুক্ত বলে মনে করছেন তারা।
এসব নীতিনির্ধারক আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপি-জামায়াত সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনে জনগণকে মাঠে নামাতে পারেনি। বারবার চেষ্টা করেও জনগণের সাড়া পাচ্ছে না। একারণেই তারা বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিচ্ছে। এদের উদ্দেশ্য, যেকোনোভাবে ক্ষমতায় আসা। এজন্য সরকারকে বেকায়দায় ফেলা ও গণতন্ত্রকে ব্যাহত করাই এদের মূল লক্ষ্য।
তবে সরকার পক্ষের দাবি, বারবার বিভিন্ন সংকট তৈরির চেষ্টা হলেও শক্ত হাতে সব কিছু নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার সক্ষম হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপি-জামায়াত যেহেতু আন্দোলনে ডাক দিয়ে মাঠে লোক নামাতে পারছে না, মানুষ তাদের ডাকে সাড়া দিচ্ছে না, তখন তারা মানুষকে হয়রানি করার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিচ্ছে। পেঁয়াজ নিয়ে, লবণ নিয়ে, এটা-ওটা নিয়ে গুজব ছড়িয়ে এক শ্রেণীর সিন্ডিকেটকে ব্যবহার করে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে। মানুষকে হয়রানি করার সঙ্গে যারা জড়িত থাকবে, তাদের চিহ্নিত করে সরকার ব্যবস্থা নেবে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না এমন একটি মহল রয়েছে যারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে। তারা যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় যেতে চায়, গণতন্ত্রকে ব্যাহত করতে চায়। তারাই বারবার এসব করছে। কিন্তু, তারা সফল হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৯
এসকে/একে