ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কিচ্ছু নাই রে ভাই, আর কিচ্ছু নাই!

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৯
কিচ্ছু নাই রে ভাই, আর কিচ্ছু নাই! অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যবসায়ী। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: নিভে গেছে আগুন, শান্ত হয়েছে এলাকা। তবে আহাজারি কাটেনি ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকদের। নজরুল ইসলামের মতো অনেকেই এখন 'আল্লাহ গো আমার কি হলো' চিৎকার করে কেঁদে উঠছেন মাথায় হাত দিয়ে!

বুধবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর টিকাটুলি এলাকায় রাজধানী সুপার মার্কেটে আগুন লাগলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় নজরুল ইসলামের হোল সেলের কসমেটিকসের দোকন আল মদিনা। কেউ একজন তাকে ক্ষয়-ক্ষতির কথা জিজ্ঞেস করলে চিৎকার করে কেঁদে উত্তর দেন, 'কিচ্ছু নাই রে ভাই, আর কিচ্ছু নাই!'

এগিয়ে তার কাছে যেতেই মাথায় হাত দিয়ে 'আল্লাহ আল্লাহ' করে চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে পকেট থেকে বের করলেন মোবাইল ফোনটা।

সবুজ স্ক্রীনে ভেসে ওঠে 'বাড়ি' নামের নম্বরটা থেকে এসেছে ফোন! সেদিকে তাকিয়েই নজরুলের কান্না বেড়ে যায় আরো- 'আল্লাহ গো, বাড়ির মানুষকে এখন আমি কি বলবো!'

নজরুল ইসলামকে ধরে আছেন তারই পরিচিত একজন। তার ভরেই দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। কথা বলার পর্যায়েও যেন নেই। তবু কেঁদে কেঁদে বলে ওঠেন- প্রায় দুই কোটি টাকার মালামাল ছিল দোকানে! আর কিচ্ছু নাই রে ভাই! সব পুড়ে শেষ!'

২৬২, ২৬৭ এবং ২৬৭৮ নম্বর দোকান নিয়ে ছিল তার পাইকারি কসমেটিকসের ব্যবসা। সন্ধ্যায় মার্কেটে লাগা আগুন ছিনিয়ে নেই তার স্বপ্নগুলোও।

মার্কেটে আগুন জ্বলছে।  ছবি: ডিএইচ বাদলবুধবার (২০ নভেম্বর) বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে মার্কেটে আগুনের সূত্রপাত হয়। যা নিয়ন্ত্রণে আসে ৬টা ৩৫ মিনিটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পাশাপাশি পুলিশ, র্যাব, আনসার ও ভলান্টিয়ার হিসেবে অনেকে কাজ করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে দোতলার একটি ইউনিটে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে আমরা ছুটোছুটি শুরু করি। মার্কেটের দোতলায় যে পাশে আগুন লেগেছে সেখানে বেডশিট, কাপড়, টেইলার্সের ৩০-৩৫টি দোকান ছিল। অল্প সময়ের মধ্যে মার্কেটের অন্য ইউনিটগুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানায়, প্রাথমিকভাবে আগুনের সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট পাঠানো হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে আরও চাওয়া হলে যথাক্রমে আরও ৬, ২ ও ৩টি গাড়ি পাঠানো হয়৷ মোট ২৫টি ইউনিট কাজ করে।

অগ্নিকাণ্ডস্থল পরিদর্শন শেষে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন বলেন, মার্কেটের ১৪/১৫টি দোকান সম্পূর্ণরূপে পুড়ে গেছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এখনই বলা সম্ভব নয়। তদন্ত হবে, তদন্তের পর এর বিস্তারিত বলা যাবে।

আরও পড়ুন>> দেড় মাস আগে রাজধানী মার্কেটে অগ্নি-নির্বাপণ মহড়া হয়
 ** রাজধানী সুপার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে
** রাজধানী সুপার মার্কেটে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ২৫ ইউনিট
** ‘হঠাৎ ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখে যন্ত্র নিয়ে দৌড়ে যাই’
** আগুন নিয়ন্ত্রণের পর চলছে ডাম্পিং
** রাজধানী সুপার মার্কেট এলাকায় যান চলাচল বন্ধ
** ‘আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম’ 

বাংলাদেশ সময়: ০০২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৯
এইচএমএস/সোহাগ পাঠান/এজেডএস/আরএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।