স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতারা জানান, নগরের হাসপাতাল রোডের পাশে পুরনো একটি একতলা ভবনসহ সরকারের ‘ক’ গেজেটভুক্ত প্রায় ১০ শতাংশ জমি জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া আমমোক্তারনামা করে দখলের অপচেষ্টা করছে একটি চক্র। তারা শহীদ আলতাফ মাহমুদ সঙ্গীত বিদ্যালয়ের এ জমি রক্ষার দাবি জানিয়েছেন।
বরিশাল সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু জানান, মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে স্থানীয় সঙ্গীতপ্রেমীদের উদ্যোগে ‘অমর একুশে’ গানের সুরকার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ মাহমুদের নামে একটি সঙ্গীত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৮৪/৮৫ সালে বরিশাল সদরের হাসপাতাল রোডের পাশে ৫০ নম্বর বগুড়া-আলেকান্দা মৌজার ১৩৪ নম্বর খতিয়ানের সাড়ে ১০ শতাংশ জমিসহ একটি একতলা পাকা ভবন আলতাফ মাহমুদ সঙ্গীত বিদ্যালয়ের নামে প্রদান করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক আজিজ আহমেদ। সেই থেকে হাসপাতাল রোডে এ বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলে আসছিল। বরিশালে আলতাফ মাহমুদের অন্যান্য স্মৃতিচিহ্ন মুছে গেলেও, এ বিদ্যালয়ের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম তাকে ও তার সৃষ্টিকর্মকে জানতে পারছে।
বরিশালের শিক্ষক আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক মহসিন-উল ইসলাম হাবুল বলেন, ২০০৭ সালে সরকারী গেজেটভুক্ত হওয়া এই জমি ২০১২ সালে বিএস রেকর্ডেও ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। কিন্তু বর্তমানে মূল্যবান এ জমির দিকেও লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে ভূমিগ্রাসীদের।
প্রভাবশালী চক্রটি মামলাসহ বিভিন্ন কৌশলে এ জমি দখলের চেষ্টা করে আসছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট অন্যরাও।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বিশিস্ট বুদ্ধিজীবী ও সুরকার শহীদ আলতাফ মাহমুদের নামে বরিশালে একটি সঙ্গীত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসন থেকে ওই প্রতিষ্ঠানের নামে ভিপি সম্পত্তি বরাদ্দ (লীজ) দেওয়া হয়। সম্প্রতি এক ব্যক্তি ওই জমি তার নিজের দাবি করে আদালতে মামলা করেছেন। কিন্তু সেখানে শহীদ আলতাফ মাহমুদ সংগীত বিদ্যালয়ের কার্যক্রম এখনো চলছে।
অজিয়র রহমান বলেন, এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন থেকে আদালতে জবাব দাখিল করা হয়েছে। বিচারাধীন কোনো বিষয় নিয়ে আমার মন্তব্য করার সুযোগ নেই। তবে রেকর্ডসহ সার্বিক তথ্য অনুযায়ী ওই সম্পত্তি ভিপি সম্পত্তি হিসেবেই থাকবে বলে আমরা আশা করছি। এবং সেখানেই শহীদ আলতাফ মাহমুদের নামে প্রতিষ্ঠিত সঙ্গীত বিদ্যালয়টি সুন্দরভাবে পরিচালিত হবে। বিদ্যালয়ের জমি রক্ষা ও যথাযথভাবে তা পরিচালনার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৯
এমএস/এইচজে