বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ১১টায় হুসনার স্বামী সফিউল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, বুধবার (২৭ নভেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ৩টায় তারা হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার আনন্দপুরে হুসনার বাবার বাড়িতে পৌঁছেন। এর আগে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একটি গাড়িতে করে তাদের নিয়ে আসা হয়।
তিনি আরও জানান, শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন হুসনা। ইতোমধ্যে সিলেটে সফিউল্লার বর্তমান কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন তারা। সেখানেই হুসানার চিকিৎসা করানো হবে।
হুসনা ফিরে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাঈমা খান্দকার বাংলানিউজকে জানান, সরকার দ্রুত তাকে আপনজনের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে। যেকোনো ধরনের সহায়তার প্রয়োজন হলে উপজেলা প্রশাসন তার পাশে দাঁড়াবে।
সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বুধবার রাত ১১টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেন হুসনা। ভিডিও বার্তা দেখে তাকে দেশে ফেরাতে উদ্যোগ নেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তিন সপ্তাহ আগে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি আরব গিয়েছিলেন হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার হুসনা। রোববার (২৪ নভেম্বর) দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি ভিডিওবার্তা পাঠান নির্যাতনের শিকার হুসনা আক্তার। তার স্বামী তাদের এক আত্মীয়ের সাহায্যে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করলে তা ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিও বার্তায় হুসনা আক্তার বলেছিলেন, আমি আর পারতাছি না। তোমরা যেভাবে পারো, আমারে বাঁচাও। এরা আমারে বাংলাদেশ পাঠাইতো চায় না। এরা আমারে ইতা করতাছে। অনেক অত্যাচার করতাছে। আমারে ভালা কামের কথা কইয়া পাঠাইছে দালালে। আমারে ইতা করতাছে ওরা। আমি আর পারতাছি না সহ্য করতাম। তোমরা যেভাবে পারো আমারে নেও।
চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে অন্তত ৯৬১ জন নারী সৌদি থেকে দেশে ফিরে এসেছেন। গৃহকর্মে যাওয়া এই নারীদের বেশিরভাগই নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিযোগ করছেন তাদের নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে। হুসনার মতো নাজরান শহরে থাকা গৃহকর্মী পঞ্চগড়ের সুমি আক্তারও ভিডিওবার্তায় তার ওপর নির্যাতনের অভিযোগ দেশে জানিয়েছিলেন। এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাকে উদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া হলে গত ১৫ নভেম্বর তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৯
এএটি