ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাজনীতিকদের অনলাইন পত্রিকা করার প্রতিযোগিতা ভালো নয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৯
রাজনীতিকদের অনলাইন পত্রিকা করার প্রতিযোগিতা ভালো নয়

ঢাকা: রাজনীতিবিদদের অনলাইন পত্রিকা করার অসুস্থ প্রতিযোগিতা রাজনীতির জন্য খারাপ বলে মনে করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন হলে রাজশাহী বিভাগ সাংবাদিক সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মত তুলে ধরেন।  

শাহরিয়ার আলম বলেন, স্থানীয়ভাবে দেখি যে সবারই একটা করে পত্রিকা আছে।

খোঁজ নিয়ে দেখবেন- বাংলাদেশের রাজনীতিবিদের প্রায় সবারই একটা করে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে পত্রিকা আছে। অন্ততপক্ষে অনলাইন আছে। কারণ এটা করতে বেশি কিছু লাগে না। অমুক-তমুককে বলে করা যায়। আমার মনে হয় এটা একটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা। রাজনীতির জন্য যেমন খারাপ, এটা সাংবাদিকতার জন্যও খারাপ। ধরে নিলাম রাজনীতিবিদরা বুঝতে পারছেন না যে এটা খারাপ। সাংবাদিকরা যদি বুঝে থাকেন, তাহলে তাদেরই উচিত এটা থেকে বিরত থাকা। কারণ সেখানে আপনার চাকরি, ইনক্রিমেন্ট, বেতন নির্ভর করছে সেখানে যে প্রতিদ্বন্দ্বী কয়েকজন রাজনীতিবিদ আছেন তাদের ওপর। আপনি যদি শুধু আপনার নিয়োগকর্তার স্বার্থের কথাই বলেন, আর বাকি সবার সমালোচনা করবেন, তাহলে আপনার চাকরি আর বেতন নিরাপদ থাকবে; এটা কোনো পেশার মানদণ্ড হতে পারে না।  

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা দেখছি বেশ কিছু মিডিয়া হাউজ সাংবাদিকদের বেতন সময়মতো দিতে পারছে না। একটি রাষ্ট্র যখন নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয় এবং উন্নত দেশ হওয়ার পথে এগিয়ে যায় সেদেশে শুধুমাত্র রপ্তানিমুখী পণ্যের বাজারের কর্মপরিবেশ আইএলও’র মানদণ্ডে হবে, তা কিন্তু নয়। সাংবাদিকতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মী ভাই-বোনদের জন্য একই মানদণ্ড থাকতে হবে। বাংলাদেশে সব শ্রমজীবী মানুষকে এ মানদণ্ডের ভেতরে নিয়ে আসতে হবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমরা দেখেছি মিডিয়াকে যার যার নিজস্ব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের স্বার্থের ব্যবহার করা হয়।  

বাংলাদেশের মিডিয়া বিশ্বের যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি স্বাধীন দাবি করে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমাদেরকে যখন অতীতে বিদেশের দু’একটি জায়গা থেকে বলা হয়েছে, আমরা কিন্তু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি যে, না আপনাদের চেয়েও আমাদের দেশের মিডিয়া অনেক বেশি স্বাধীন। যেভাবে সরকারের সমালোচনা করা হয়, সে জায়গায় কোনো দেশের কেউ বলতে পারবে না, বাংলাদেশের মিডিয়ায় সরকারের হস্তক্ষেপ আছে।  

পরিবেশ বিপর্যয়ে উত্তরবঙ্গ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে দাবি করে তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গের একটি আলাদা চরিত্র আছে। পরিবেশ বিপর্যয়ে উত্তরবঙ্গ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমি গত কয়েকদিন ধরে ফেসবুকে একটি সেনসিটিভ ইনফরমেশন দিচ্ছি। পরিবেশ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের সব শহর এবং ঢাকার তিনটি শহরতলী- নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরের বাতাসের মান কেমন, এটা বাংলাদেশ সরকার পরিবেশ অধিদপ্তরকে দায়িত্ব দিয়েছে বিদেশি একটি সংস্থার সহায়তায় প্রতিদিন একটি র‌্যাটিং বের করার। কয়েকদিন আগে আমরা দিল্লিতে দেখলাম আমাদের ছেলেরা প্র্যাকটিস করতে পারছে না মুখে মাস্ক পরেছে। সেখানে অক্সিজেন বার খোলা হয়েছে টাকার বিনিময়ে। সেই দিল্লির এবং সমকক্ষ বেইজিংয়ের থেকে ঢাকার গড় মাত্রা ৫০ পয়েন্ট বেশি। গত ১০ দিনে আমি রাজশাহী-রংপুরের মাত্রা দেখেছি ১৫০-২০০ এর কাছাকাছি। যা দিল্লির থেকেও বেশি। আমরা কিন্তু এই জিনিসগুলো আমলে নিচ্ছি না। সাংবাদিক ভাইদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা পরিবেশ নিয়ে কাজ করবেন। শুধুমাত্র কারখানার বর্জ্য, নদীদূষণ এগুলো নিয়ে নয়, সামগ্রিকভাবে পরিবেশ নিয়ে গুরুত্ব সহকারে কাজ করার দরকার।  

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিউজে) সভাপতি আবু জাফর সূর্য, রাজশাহী বিভাগ সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৯
এমএএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।