বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কাপ্তাই হ্রদে ভাসমান গবেষণা তরীসহ দেশের পৃথক চার প্রকল্প উদ্বোধন করার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধশীল দেশ গড়ার স্বপ্নে এ দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।
১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তিচুক্তি সম্পাদন করি। এর মধ্য দিয়ে ১৯৯৮ সালে ১০ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়িতে ১৮০০ সশস্ত্র সদস্য আমার কাছে অস্ত্র সমর্পণ করেছে। এখন আমাদের মূল লক্ষ্য জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম আর অবহেলিত নেই।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপি সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক নিষিদ্ধ করে রেখেছিল। পরবর্তীতে আবার ক্ষমতায় এসে আমরা মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক চালু করেছি। পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ অত্যন্ত দরিদ্র ছিল। তাদের জীবনমান উন্নয়নে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। তাই সেখানকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রত্যেকটি ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সোলার প্যানেল দেওয়া হচ্ছে। কোথাও কোনো বাড়িঘর অন্ধকারে থাকবে না। ঢাকায় পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স করে দিচ্ছি, যাতে আঞ্চলিক পরিষদ, পার্বত্য জেলা পরিষদসহ সেখানকার জনপ্রতিনিধি ও বিশিষ্ট লোকজন ঢাকায় এসে তাদের কাজ করতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রাঙামাটির কাপ্তাই লেক সৃষ্টি মূলত: কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ফলে। সেটি এখন বিশাল জলরাশির এলাকা। হ্রদ ঘিরে গড়ে উঠেছে নতুন শহর। মৎস্য উৎপাদন হচ্ছে। উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে দরকার গবেষণা। মাছের অভয়ারণ্য, ডিম পাড়ার আবাসস্থল এবং কীভাবে উৎপাদন বহুমুখী করা যায়- সেসব বিষয় গবেষণার জন্য চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে ‘কাপ্তাই লেকে গবেষণা তরী’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন করা চার প্রকল্পের মধ্যে রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় বাস্তবায়নাধীন দুটি হচ্ছে- ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এবং চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস শীর্ষক প্রকল্পের আওতাধীন কাপ্তাই হ্রদে নির্মিত ‘ভ্রাম্যমাণ গবেষণা তরী’ বাস্তবায়ন করছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এটির কার্যাদেশ মূল্য ৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
প্রধানমন্ত্রীর এ দুটি প্রকল্প উদ্বোধন উপলক্ষে ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ’ শীর্ষক প্রকল্প নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে এবং কাপ্তাই হ্রদে নির্মিত ‘ভ্রাম্যমাণ গবেষণা তরী’ প্রকল্পে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভাকক্ষে পৃথক দুটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
এসব সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ,পুলিশ সুপার আলমগীর কবির, চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও পদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৯
এসএইচ