ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মেয়ের স্মৃতি ফ্রেমবন্দি করে রেখেছেন দিয়ার মা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৯
মেয়ের স্মৃতি ফ্রেমবন্দি করে রেখেছেন দিয়ার মা

ঢাকা: এক বছর চার মাসে আগে জাবালে নূর পরিবহনের বেপরোয়া বাস কেড়ে নিয়েছে শহীদ রমিজউদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিমের প্রাণ। মেয়েকে হারিয়ে এখনো শোকে কাতর মা রোকসানা বেগম। মেয়ের কথা বলতে বলতে বারবার ডুকরে কেঁদে ওঠেন তিনি।

২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের চালকের রেষারেষিতে এক বাসের চাপায় মিম ও আবদুল করিম রাজীব নামের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়।
 
দুর্ঘটনার এক বছর চার মাস তিন দিন পর রোববার (০১ ডিসেম্বর) রায় হতে যাচ্ছে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার।

আদরের মেয়ে দিয়াকে হারিয়ে মেয়ের পোশাক, বই-খাতা, ছবি নিয়ে দিন কাটে মায়ের। বাসার আলমারিতে মেয়ের স্মৃতিগুলো ফ্রেমবন্দি করে রেখেছেন মা রোকসানা বেগম। মেয়ে মাকে ছেড়ে চলে গেছে অনেক দূরে, কিন্তু মা তাকে ছেড়ে থাকতে পারেন না। প্রতিদিন আসরের নামাজ আদায় করে মা হাজির হন মেয়ের কাছে। মেয়ের সামনে নীরবে চোখের জল ফেলেন মা। অকালে মেয়েকে হারিয়ে এখন এভাবেই দিন কাটে দিয়া খানম মিমের মা রোকসানা বেগমের। আলমারিতে সাজানো দিয়ার সবকিছু এখন স্মৃতি।  ছবি: বাংলানিউজদিয়ার বাসায় গিয়ে দেখা যায়, শয়নকক্ষের একপাশে মা রোকসানা বেগম দিয়ার ব্যবহার্য সব জিনিস আলমারিতে আলাদা করে রেখেছেন। সেই আলমারির তাকে তাকে সাজানো রয়েছে মেয়ের পোশাক, কলেজের পরিচয়পত্র, জুতা, বই খাতা। আলমারি থেকে ফ্রেমবন্দি ছবি বুকে টেনে নিয়ে মেয়েকে আদর করেন। কিন্তু মেয়েতো আর সাড়া দেয় না।

রোকসানা বেগম বলেন, ‘মেয়েটা আমার অন্য দুই ছেলেমেয়ের থেকে আলাদা। আমার মন একটু খারাপ হলেই পাশে এসে জিজ্ঞাসা করতো, মা তোমার কী হয়েছে? এমন একটা কথা বলতো আর মুখ ভার করে থাকতে পারতাম না। সবাইকে আনন্দ দিতো দিয়া। ওরা দুই বোন ছিল আমার দুই হাত। এখন দিয়া চলে গেছে, আমার এক হাত কাটা পড়ছে’।

দিয়ার মা বলছিলেন, ‘এখন ওর কথা চিন্তা করেই আমার সারাটা দিন কাটে। প্রায় দেড় বছর চলে গেলো, মেয়ে আমার নেই। কিন্তু আমিতো ওরে ছাড়া থাকতে পারি না। প্রতিদিন আসরের নামাজ শেষ করে ওর কবরে যাই। যত ঝড়-বৃষ্টি হোক, ওর কাছে না গেলে আমার শান্তি লাগে না। মেয়ের কবরের দিকে চেয়ে থাকি, মেয়ে আমার সাড়া দেয় না। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৯
টিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।