রোববার (১ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা থেকে দেশের তিনটি বিভাগের মতো লালমনিরহাটেও জ্বালানি তেল বিক্রি, বিপণন ও সরবরাহ বন্ধ রাখে পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংক লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
স্থানীয়রা জানান, ১৫ দফা দাবিতে রোববার (১ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা থেকে রংপুর, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে সব ধরনের জ্বালানি বিক্রি, বিপণন ও পরিবহন বন্ধ করে অনিদিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্রাংকলরি মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
তেলের অভাবে চলতি রবি মৌসুমে বিভিন্ন সবজি ক্ষেতে সেচ দিতে পারছেন না চাষিরা। একইভাবে আমন তোলার পরে আলুসহ বিভিন্ন সবজি চাষের জন্য জমি চাষ দিতে পারছেন না কৃষকরা। গরু আর লাঙল ছেড়ে ট্রাক্টরে নির্ভর আধুনিক চাষ পদ্ধতিতে অভ্যস্থ কৃষকরা জ্বালানি তেলের অভাবে জমি চাষ করতেও পারছেন না। তেল নিতে এসে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে কৃষকদের।
লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কের আদিতমারী ফাতেমা ফিলিং স্টেশনে সকাল থেকে যানবাহনের চালকসহ হাজারো কৃষককে তেল ছাড়াই খালিপাত্র হাতে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। অনেক চালক তেল না পেয়ে ফিলিং স্টেশনেই গাড়ি ফেলে চলে গেছেন।
মহিষখোচা থেকে তেল নিতে আসা ট্রাক্টর চালক নজরুল ইসলাম ভ্যালকা বাংলানিউজকে বলেন, নিজেরসহ এলাকার কয়েক হাজার চাষির জমি চাষ দিতে হবে। তেল নিতে এসে শুনি তেল বিক্রি বন্ধ। আগে জানানো হলে তেল সংগ্রহ করে ট্রাক্টর চালাইতাম। ট্রাক্টর বন্ধ থাকলে জমি চাষ হবে না। চাষাবাদ বন্ধ হবে কৃষকের। ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষকরা।
কৃষক হাসান মিয়া বাংলানিউজকে জানান, বাঁধাকপি ও ফুলকপিসহ বিভিন্ন জাতের সবজি চাষবাদ করেছেন। সবজি ক্ষেত বাঁচিয়ে রাখতে একদিন পর পর সেচ দিতে হয়। মেশিনের জন্য তেল নিতে এসে শুনতে পান তেল বিক্রি বন্ধ। তাই বাধ্য হয়ে তেলের খালি পাত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে যান তিনি।
কৃষক শাহনসাহ বাংলানিউজকে বলেন, রবি মৌসুমের শুরুতে জ্বালানি বিক্রি বন্ধ হলে হালচাষ বা সেচ দিতে না পারলে সবজিসহ আগাম বোরো চাষাবাদ ব্যাহত হবে। এ সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
ট্রাকচালক আমিনুল হক বাংলানিউজকে জানান, পণ্য আনতে বুড়িমারী বন্দরে যাচ্ছিলেন। গাড়িতে তেল কম থাকায় ফাতেমা ফিংলিং স্টেশনে যান। কিন্তু পাম্প থেকে তেল না দেওয়ায় গাড়ি ফাতেমা ফিলিং স্টেশনে ফেলে চলে যান। দ্রুত তেল সংকট সমাধান না হলে নিত্যপণ্যের দামে এর প্রভাব পড়বে বলেও দাবি করেন তিনি।
ফাতেমা ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার বিমল চন্দ্র বাংলানিউজকে বলেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে সব ধরনের জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ রয়েছে। সাধারণদের মতই পুলিশ, বিদ্যুৎসহ সরকারি কয়েকটি গাড়ি তেল ছাড়াই ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্রাংক লরি মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের লালমনিরহাট জেলা শাখার সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি সিরাজুল হক বাংলানিউজকে বলেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে তেল বিক্রি-বিপণন ও পরিবহন বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ঢাকায় একটি বৈঠকে বসেছি। ফলপ্রসু আলোচনা হলেই এ সংকট সমাধান হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘন্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৯
আরএ