ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জাতিসংঘের নাকের ডগায় রোহিঙ্গা নিধন ঘটেছে: টিআইবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০১৯
জাতিসংঘের নাকের ডগায় রোহিঙ্গা নিধন ঘটেছে: টিআইবি বক্তব্য রাখছেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: জাতিসংঘসহ অন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর নাকের ডগায় রোহিঙ্গা নিধন ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে ‘বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের (রোহিঙ্গা) নাগরিকদের বাংলাদেশে অবস্থান: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক প্রতিবেদন-প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের যে প্রক্রিয়ায় নিধন করা হয়েছে, সেটা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো (যারা মিয়ানমারের কাজ করে) অবহিত ছিল না সেটা কোনোভাবেই বলা যাবে না।

তারা অবহিত ছিল সেই তথ্য-প্রমাণ ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। তা সত্ত্বেও তারা রোহিঙ্গানিধন রোধে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ভূমিকায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরাও মানবিক কারণে তাদের স্বাদরে গ্রহণ করেছি। রোহিঙ্গা সমস্যার জন্য বাংলাদেশ কোনোভাবেই দায়ী নয়। বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করছে। তবে অন্য পক্ষে মিয়ানমার অনেক শক্তিশালী ও তাদের অবস্থানে অনড়। এর কারণ হচ্ছে, মিয়ানমারের সমর্থক গোষ্ঠীর শক্তি বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। ভারত-চীন-জাপান তারা আমাদের বলছে রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা বাংলাদেশের পাশে আছে। অন্যদিকে রোহিঙ্গা নিধনের বিষয়ে সুরক্ষা দেওয়া ও প্রত্যাবাসনে অনড় অবস্থানে সবচেয়ে বেশি সমর্থন দিচ্ছে চীন-জাপান ও ভারত।

দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অবস্থানের কারণে অর্থনৈতিক ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে টিআইবি পরিচালক বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হওয়ায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দের কথা ছিল, তা ক্রমশই কমে আসছে। রোহিঙ্গাদের ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন খাত ভিত্তিক প্রশাসনিক ও কর্মসূচি ব্যয় বেড়েছে। বাংলাদেশে ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা বাবদ ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থ ছাড়ের পরিমাণ ২৩৮ দশমিক ২ কোটি টাকা।

এদিন রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ, মানবিক সহায়তার চ্যালেঞ্জ, কার্যক্রম পরিচালনায় অনিয়ম ও দুর্নীতি, নিয়মবহির্ভূত অর্থ আদায়ের খাত এবং পরিমাণ বিষয়ে টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এছাড়াও টিআইবি রোহিঙ্গাদের দীর্ঘমেয়াদি অবস্থানের ঝুঁকি ও প্রত্যাবাসনের চ্যালেঞ্জ বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম প্রকাশ করে।

গবেষণা প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক বিষয়, পরিবেশের ওপর প্রভাবসহ বিভিন্ন নেতিবাচক প্রভাব নিরূপণ করে তা মোকাবিলায় কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণ, অর্থায়ন ও বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে ১৩টি সুপারিশমালা তুলে ধরে টিআইবি।  

গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা দলে ছিলেন টিআইবির রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহানুর রহমান, স্টার প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজমুল হুদা মিনা এবং গোলাম মহিউদ্দিন। ঘোষণা কার্যক্রমের সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসাবে শাহাজাদা এম আকরাম। গবেষণায় উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৯
আরকে‌আর/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।