সূত্র জানায়, রংপুরের বাহারকাছনা এলাকার নয়াপাড়ার বাড়িতে স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন আব্দুর রাজ্জাক। গত প্রায় ছয় মাস আগে শ্বশুরবাড়ির টাকায় বসতভিটা কিনলেও প্রায়ই টাকার জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন।
রোববার (০৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে আব্দুর রাজ্জাক নিজে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসার জন্য প্রতিবেশীকে ডাক দেন। এ সময় কয়েকজন প্রতিবেশী তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে ঘরে গিয়ে তার স্ত্রী রত্না, মেয়ে নেহার (৩) ও বাবুর (১) মরদেহ দেখতে পেয়ে প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেন। স্ত্রী-সন্তানদের হত্যার পর আব্দুর রাজ্জাক নিজেও গলায় ছুরি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলে জানা যায়।
নিহত রত্নার মা সাহেরা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, এর আগে আমার মেয়েকে নিয়ে রাজ্জাক তার বাপের বাড়িতে থাকতো। কিন্তু সেখানে শাশুড়ির পরিবার আমার মেয়েকে নির্যাতন করতো। পরে আমি টাকা দিয়ে এখানে জমি কিনে দেই বাড়ি করার জন্য। মেয়ের কাছে শুনেছি সে মাদক গ্রহণ করতো এবং প্রায়ই টাকার জন্য মারধর করতো। গত ২ দিন আগেই তাকে নির্যাতন করে আমাদের বাড়িতে পাঠানো হয়েছিলো টাকা নিতে। কিন্তু এমন সর্বনাশ হবে ভাবতে পারিনি।
এদিকে হত্যাকারী সন্দেহে আব্দুর রাজ্জাক র্যাবের হেফাজতে রয়েছেন।
র্যাব-১৩ রংপুরের অধিনায়ক রেজা আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে সে (আব্দুর রাজ্জাক) হত্যাকারী বলে মনে হচ্ছে। সে মাদকসেবী ছিলো এবং মাদকের টাকার জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন করতো। তাই সবসময় তাদের পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে যখন তাকে আটক করা হয় তখনো সে মাদকাসক্ত ছিল। মাদকাসক্ত অবস্থায় ভোরের দিকে স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করা হয়েছে।
রংপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ বিভাগ) কাজী মুত্তাকি ইবনু মিনান বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে সে মাদকাসক্ত। মরদেহের সুরতহালের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে।
এর আগে দুপুরে রংপুরের বাহারকাছনা এলাকার একটি বাড়ি থেকে দুই সন্তানসহ মায়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত নারীর স্বামী আব্দুর রাজ্জাককে আটক করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২১০৯
জেডএস