১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় ক্র্যাক-ডাউনের খবর পাওয়ার পর পরই মানিকগঞ্জের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বৈঠক করে তৎকালীন অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন আবদুল হালিম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি বিপ্লবী পরিষদ গঠন করে। ওই রাতেই পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মানিকগঞ্জের ট্রেজারিতে রক্ষিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ বের করে ছাত্র ও যুবকদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
এরপর থেকে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলে মুক্তি বাহিনীর সাথে পাক বাহিনীর বেশ কয়েকটি যুদ্ধ হয়। এরমধ্যে গোলাইডাঙ্গা, সূতালড়ি, আজিমনগর, বায়রা, নিরালী সাটুরিয়া, নারচি, বালিরটেক, গাজিন্দা, মানোরাসহ বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ হয়।
তবে গোলাইডাঙ্গার যুদ্ধে ৮১ জন পাক হানাদার ঘটনাস্থলে মারা যায়। পরের দিন পাক বাহিনী হেলিকপ্টারে আরও সৈন্য বৃদ্ধি করে গোলাইডাঙ্গা গ্রামে হামলা চালিয়ে কয়েকশ ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়। গুলি করে হত্যা করে আট জন নিরীহ গ্রামবাসীকে। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে পাক বাহিনী গোটা মানিকগঞ্জে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায়। পাক বাহিনীর হাতে মানিকগঞ্জের সহস্রাধিক নিরীহ মানুষ নিহত হয়।
ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই মুক্তি বাহিনীর আক্রমণে পাক সেনারা মানিকগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পিছিয়ে যেতে শুরু করে। ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের পাল্টা হামলায় পাক বাহিনী মানিকগঞ্জ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
একাত্তরের সেই ভয়াল দিনের কথা স্মরণ করে মুক্তিযোদ্ধের বিজয়মেলা কমিটির আহবায়ক গোলাম মহীউদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের ভয়াল দিনগুলো আজো ভুলতে পারেনি মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার কথা জানান মুক্তিযোদ্ধারা। পাশাপাশি দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে নিতে এই প্রজন্মের প্র্রতি আহবান জানান।
হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রাখতে আজ থেকে শুরু হবে ১৫ দিনের বিজয় মেলা।
বাংলাদেশ সময়: ০৫০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৯
এমআইএইচ/এমএমএস