ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বাবা-ছেলের দুর্নীতির সত্যতা পেয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৯
বাবা-ছেলের দুর্নীতির সত্যতা পেয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তর

লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার ভবানীপুর ছেফাতিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও তার ছেলের দুর্নীতি এবং অর্থ আত্মসাতের সত্যতা পেয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর।

বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে তদন্ত শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শক ও তদন্ত কর্মকর্তা মুহম্মদ হোসাইন।

মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শক ও তদন্ত কর্মকর্তা মুহম্মদ হোসাইন বলেন, উপজেলার ভবানীপুর ছেফাতিয়া কামিল মাদ্রাসার বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মঞ্জুরুল ইসলাম ২০০৯ সালের ৯ জুন সহকারী অধ্যাপক হিসেবে মাদ্রাসায় যোগদান করেন।

একই ব্যক্তি ২০১০ সালে হাতিবান্ধা সরকারি আলিমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজেও প্রভাষক পদে যোগদান করেন। তিনি দুই প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত বেতন-সম্মানি উত্তোলন করে আসছেন।  

পরবর্তি সময়ে হাতিবান্ধা সরকারি আলিমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজ জাতীয়করণ ঘোষণা হলে ২০১৮ সালের ১ আগস্ট ভবানীপুর ছেফাতিয়া কামিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক পদ থকে পদত্যাগ করেন মঞ্জুরুল ইসলাম। কিন্তু পদত্যাগ করলেও ওই মাদ্রাসা থেকে গত ১৬ মাস ধরে মাসিক প্রায় ৩৭ হাজার টাকা করে নিয়মিত বেতন উত্তোলন করেন তিনি। তার বাবা মাওলানা নূরল ইসলাম ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হওয়ায় বাবা-ছেলে দুই জনের যোগসাজে প্রতি মাসে প্রায় ৩৭ হাজার টাকা করে চাকরির বিধি লঙ্ঘন করে সরকারি অর্থ উত্তোলনপূর্বক আত্মসাত করে আসছেন। মাদরাসার অধ্যক্ষ নুর ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়লে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদৌস আহম্মেদও ওই অধ্যাপকের অবৈধভাবে টাকা উত্তোলনে সহযোগিতা করেন।

এমন একটি অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তদন্ত করে প্রতিবেদন চেয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরকে চিঠি পাঠায়। ওই পত্রের আলোকে তদন্ত করে বাবা অধ্যক্ষের সহযোগিতায় সহকারী অধ্যাপক মঞ্জুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কয়েক লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শক মুহম্মদ হোসাইন।

অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক মঞ্জুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমি ভবানীপুর ছেফাতিয়া কামিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক পদ থকে পদত্যাগ করেছি। ওই দিনেই আবার পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের জন্য আবেদনও করেছি। আমার বাবা অসুস্থ বিষয়টি একটু মানবিক বিবেচনায় দেখা উচিত। তবে অসুস্থ থাকায় ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নূরল ইসলামের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।  

ভবানীপুর ছেফাতিয়া কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদৌস আহেম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, সহকারী অধ্যাপক মঞ্জুরুল ইসলামের বাবা নুর ইসলাম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। তিনি আগে থেকেই মঞ্জুরুল ইসলামকে বেতন দিয়ে আসছেন। পরিস্থিতির শিকার হয়ে আমিও বেতন দিয়ে আসছি।  

তবে মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওয়াছেক খান এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন।  

হাতীবান্ধা সরকারি আলিমুদ্দিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামসুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, মঞ্জুরুল ইসলাম দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন-সম্মানি তুলছেন। বিষয়টি জানার পর গত ৬ মাস আগেই আমি তার বেতন বন্ধ করে দিয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।