সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের অফিসিয়াল পেজে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও অফিস এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, গত শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হাতিরঝিল এলাকায় এক পুরুষকে কুকুর বানিয়ে তার গলায় দড়ি বেঁধে টেনে নিয়ে যাচ্ছে এক নারী।
পরবর্তী সময়ে বিষয়টি উপ-পুলিশ কমিশনারের নজরে পড়ামাত্রই ভিডিওতে অংশগ্রহণকারী পুরুষ ও নারীকে সনাক্ত এবং তলব করা হয়। এরই সূত্রে রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বিপ্লব বিজয় তালুকদারের কার্যালয়ে হাজির হন শিল্পী টুটুল চৌধুরী ও আফসানা হাসান সেঁজুতি।
এসময় জিজ্ঞাসাবাদে উপ-পুলিশ কমিশনারকে মৌখিক ও লিখিতভাব এ দুই শিল্পী জানান, গত ২৫ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় হাতিরঝিল থানার রামপুরা ব্রিজ এলাকায় তারা দুজন একটি ‘স্ট্রিট আর্ট পারফরমেন্স’ করেন। এটি আসলে ১৯৬৮ সালে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় ভেল্যি এক্সপোর্ট ও পীটার ওয়েভেল নামের দুই শিল্পীর ‘From the Portfolio of Doggedness’ পারফরমেন্সের পুনরাবৃত্তি। এর মূল প্রতিবাদ্য ছিল: মানুষ কালের যাত্রায় অগ্রসর হচ্ছে। সে অগ্রযাত্রার ঊর্দ্ধমুখী চলক হিসেবে একজন শিল্পী হলো সামাজিক উপাদান মানুষ ও সভ্যতার ধ্রুবক। অন্যজন আতঙ্কিত, অনুসরণরত ও শীতের প্রকটতায় নিজেকে মানিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
শিল্পী টুটুল চৌধুরী ও আফসানা হাসান সেঁজুতি আরো জানান, শনিবার ১ ঘণ্টাব্যাপী তাদের‘From the Portfolio of Doggedness’ পারফর্মিং আর্টের পুনরাবৃত্তি করার পরিকল্পনা থাকলেও হাতিরঝিল থানাপুলিশের বাধার মুখে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যেই পারফরমেন্স শেষ না করে তারা হাতিরঝিল এলাকা ত্যাগ করে। সে সময় হাতিরঝিলে আগত দর্শনার্থী ও পথচারীদের কেউ কেউ তাদের হাতিরঝিল ত্যাগের দৃশ্য ধারণ করে সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে। ফলে মানুষ সামাজিক তাদের মূল পারফর্মেন্স না দেখে যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা অবাঞ্ছিত দৃশ্য দেখে নেতিবাচক ধারণা পান।
‘হাতিরঝিলের মতো উন্মুক্ত জনাকীর্ণ স্থানে প্রকাশ্য দিবালোকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও হাতিরঝিল কতৃপক্ষের পূর্বানুমতি বা কোনোরকম অবহিতকরণ ছাড়াই বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিরোধী এ ধরনের পারফর্মেন্স কেন করা হলো?’, তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদারের এ প্রশ্নের উত্তরে ওই দুই শিল্পী দুঃখপ্রকাশ করেন এবং পরবর্তীতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না বলে মৌখিক ও লিখিত প্রতিশ্রুতি জানান।
আফসানা হাসান সেঁজুতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পেইন্টিং ও ড্রয়িং বিভাগের ছাত্রী। এর আগে এ পারফর্মেন্সকে ‘সমাজতাত্ত্বিক’ ও ‘আচরণমূলক’ কেসস্টাডি হিসেবে উল্লেখ করেন এ শিল্পী।
সে সময় তিনি জানান, ‘পারফর্মিং আর্টে’ একজন নারী একজন পুরুষকে গলায় রশি বেঁধে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এটা আমাদের নৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা কিংবা আরো ভালো কোনো সামাজিক অবস্থার চিত্র ফুটিয়ে তোলে না। এ আর্টের মধ্য দিয়ে আসলে সমাজ আমাদের ওপর যে সিস্টেম চাপিয়ে দিয়েছে সেটাই তুলে ধরা হয়েছে। এই কাজ করে আমরা দেখতে চেয়েছি, এর প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি। সাধারণ মানুষ বিষয়টাকে কীভাবে নেয়। ’
এ নিয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক ছিল না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সাধারন মানুষ।
আরও পড়ুন>>> এবার ভাইরাল ‘হিউম্যান ডগ’!
বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৯
এইচজে