ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মেহেন্দিগঞ্জে খালে অবৈধভাবে বাঁধ নির্মাণের অভিযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২০
মেহেন্দিগঞ্জে খালে অবৈধভাবে বাঁধ নির্মাণের অভিযোগ

বরিশাল: বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার আলিমাবাদ এবং চরগোপালপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় মাসকাটা ও তেঁতুলিয়া নদীর মোহনায় ভুতের খালে অবৈধভাবে বাঁধ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। 

এতে নদীর পানির স্রোতের স্বাভাবিক গতিধারা ব্যাহত হয়ে বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বলছেন, দুইটি বিদ্যালয়সহ বাড়িঘর ভেঙে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয়রা।

যেখানে স্থানীয়রাই নিজ ইচ্ছা ও শ্রমের মাধ্যমে এক মৌসুমের জন্য অস্থায়ী এ বাঁধটি নির্মাণ করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আলিমাবাদের চরমিঠুয়া গ্রামের প্রায় তিনশ’ ফুট প্রস্থের এ খালে গাছ, বাঁশসহ বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে গত চারদিন ধরে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। গ্রামবাসীর কাছ থেকে গাছ ও বাঁশ সংগ্রহ করে অপরিকল্পিতভাবে খালে ওই বাঁধ নির্মাণে স্থানীয়রা কেউ কেউ একমত হলেও বেশিরভাগই বিরোধিতা করছেন।

সরকার যখনই সারাদেশে খাল ও নদী অবৈধ দখলমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে ঠিক তখনই এমন কর্মকাণ্ডে হতাশ স্থানীয়রা। তাদের ধারণা, ওই বাঁধের মধ্যেই প্রভাবশালীরা মাছ চাষ করতে পারেন। আবার কেউ বলছেন, ওই স্থানে সড়ক নির্মাণের জন্য এ বাঁধ দেওয়া হচ্ছে। যাতে করে ব্যক্তি বিশেষের লাভ হলেও ক্ষতি হবে পরিবেশের ও আশপাশের মানুষদের।

এ বিষয়ে চরগোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সামছুল বারী (মনির) বলেন, প্রথম খালে যে গাছ ও বাঁশ দিয়ে বাঁধ দেওয়ার কাজ করা হচ্ছে তা গ্রামবাসীরা মিলে করছেন। বিষয়টি আমি অবগত রয়েছি। তবে আমার নির্দেশে খালে বাঁধ দেওয়ার যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা সত্য নয়। একটি স্বার্থন্বেষী মহল এমনটা প্রচার করছে।

তিনি বলেন, বর্ষার সময় বৃহত্তর মেঘনার পানি যখন প্রভাবিত হয় তখন এ খাল কেন্দ্রিক পানি প্রবাহের গতি ও চাপ বেশি থাকে। ফলে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। যে কারণে লেঙ্গুটিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মিথুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবনসহ গ্রামবাসীদের বাড়িঘর নদী ভাঙনের হুমকির মধ্যে রয়েছে। এ অবস্থায় শুধু সামনের বর্ষা মৌসুম অর্থাৎ এক মৌসুমের জন্য অস্থায়ীভাবে বাঁধের মতো দেওয়া হচ্ছে। যা কোনো নদীতে নয়, শুধু খালের একটি অংশে।  

অস্থায়ী এ বাঁধ দেওয়ার পরও নৌযান চলাচল স্বাভাবিক থাকবে বলে জানিয়ে সামছুল বারী বলেন, এখান থেকে কোনো লঞ্চ বা ট্রলার চলাচল করে না।  

তিনি বলেন, অস্থায়ী এ বাঁধের কারণে পানির স্রোতের চাপ থেকে গ্রাম যেমন রক্ষা পাবে, তেমনি পানি অন্যদিকে চাপ দিয়ে ভাঙন বন্ধ হয়ে গেলে বাঁধেরও আর প্রয়োজন হবে না। তাই শুধু আগামী বর্ষায় ভাঙন রোধের জন্য গ্রামবাসীরা মিলে গাছ-বাঁশ দিয়ে এ বাঁধ নির্মাণ করছেন। এখানে কোনো আর্থিক লেনদেনের বিষয় নেই। এর আগেও ভাঙন রোধে এমনটা নদী বেষ্টিত মেহেন্দিগঞ্জের অন্য খালেও হয়েছে।

নদী-খাল বাঁচাও আন্দোলন বরিশাল কমিটির সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু জানান, নদী ও খালের উপর ব্রিজ করার বিষয় ভিন্ন। এখানে যদি নদী বা খাল বন্ধ করে সড়ক হয় তাহলে সেই সড়ক থেকে ওই এলাকার মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই এ বিষয়ে দ্রুত স্থানীয় প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

এদিকে বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২০
এমএস/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।