আবহাওয়া অধিদফতর প্রায় এক সপ্তাহ আগেই জানিয়েছিল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সারাদেশেই বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সকালের গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে সেই পূর্বাভাস যেন ঠিক ঠিক মিলে যায়।
এতে সকাল থেকেই দুর্ভোগে পড়েছে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শ্রমজীবী মানুষ। বর্তমানে বৃষ্টি থেমে গেলেও বইছে ঠাণ্ডা বাতাস। তাই রাজশাহীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহত হচ্ছে। এরই মধ্যে বৃষ্টিতে মহানগরের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।
এদিকে, শীতের প্রভাবে সকাল থেকে ভোগান্তিতে পড়ছে খেটে খাওয়া মানুষ। শীতে নিম্নআয়ের মানুষ পড়েছেন সংকটে। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা কষ্টে দিনযাপন করছেন। শীত সহ্য করতে না পেরে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। শীতের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। এতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পরিসংখ্যান বলছে, প্রায় এক সপ্তাহ থেকে রাজশাহীতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে গত ২৪ জানুয়ারি রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৫ জানুয়ারি ছিল ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৬ জানুয়ারিও ছিল একই তাপমাত্রা। এরপর ২৭ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৮ জানুয়ারি ছিল ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২৯ জানুয়ারি সকালে রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন বাংলানিউজকে বলেন, টানা মৃদু শৈত্যপ্রবাহের ধকল শেষে বুধবার তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু ভোরের ঘন কুয়াশা ও সকালের বৃষ্টিতে শীতের প্রকোপ কমেনি। সকাল থেকে সূর্যের তেজ না থাকায় ঠাণ্ডা বাতাসে একই পরিমাণ শীত অনুভূত হচ্ছে।
তবে মধ্যমাঘে এমন বৃষ্টি হওয়া আবহাওয়ার খুবই স্বাভাবিক আচরণ জানিয়ে লতিফা জানান, বুধবার সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে রাজশাহীতে বৃষ্টি শুরু হয়। চলে ৯টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি প্রায় দু’ঘণ্টা স্থায়ী ছিল। এ সময় রাজশাহীতে ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণও বাড়বে বলেও জানান রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক লতিফা।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস উল্লেখ করে রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত আবহাওয়া কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) পর্যন্ত এমন আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে।
এরপর থেকে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমবে এবং দিনের তাপমাত্রা বাড়বে। তবে মেঘলা আবহাওয়ার কারণে উত্তরাঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের আরেকটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান আবহাওয়া কর্মকর্তা কামাল।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ডিডি) শামসুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, মাঘ মাসের বৃষ্টি বরাবরই কৃষিজাত ফসলের জন্য আশির্বাদ। তবে এবার মাঘ মাসের শুরুতেও রাজশাহীসহ বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। মধ্য মাঘেও হচ্ছে। এ বৃষ্টি ফসলের জন্য ক্ষতিকর নয়। আরও এক থেকে দু’দিন এমন বৃষ্টি হলেও ফসলের কোনো ক্ষতি হবে না বলেও জানান কৃষি সম্প্রসারাণ অধিদফতরের ডিডি শামসুল।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২০
এসএস/আরআইএস/