ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্তদের চাল অফিস সহকারীর নামে বরাদ্দ!

এস এস শোহান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২০
বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্তদের চাল অফিস সহকারীর নামে বরাদ্দ!

বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোল্লাহাটে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের জন্য বরাদ্দ চাল বিতরণ না করার অভিযোগ উঠেছে। ওই উপজেলার জন্য বরাদ্দ ১০ মেট্রিকটন চাল সব নিয়ম ভেঙে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী হাসিবুর রহমানের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ জনপ্রতিনিধিদের। তবে মোল্লাহাট উপজেলা খাদ্যগুদাম থেকে বরাদ্দ ওই চাল এখনও উত্তোলন করা হয়নি বলে জানিয়েছেন গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমতাজ পারভীন।

এদিকে জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় বরাদ্দ চাল আড়াই মাসেও কেন ক্ষতিগ্রস্তরা পেলেন না তা নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ত্রাণ শাখা সূত্রে জানা যায়, তাৎক্ষণিকভাবে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের খাদ্য চাহিদা মেটাতে ৯ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে জেলার ৯টি উপজেলার মোট ২শ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।

এর মধ্যে মোল্লাহাট উপজেলায় বরাদ্দ দেওয়া হয় ১০ টন চাল।

মোল্লাহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হায়দার মোল্লা বলেন, বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে তাৎক্ষণিকভাবে খাদ্য সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রী বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। আমরা শুনেছি মোল্লাহাটের মানুষের জন্যও ১০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তরা সেই চাল পায়নি। আর কোনোদিন পাবে কিনা তাও বলতে পারি না।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল হক শওকত বলেন, উপজেলার বিভিন্ন বরাদ্দের বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি অন্য অফিসের বাইরের বিভিন্ন লোকদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। এটা কোনোভাবে স্বচ্ছতা প্রমাণ করে না।

উপজেলা সদরের উদয়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসকে হায়দার মামুন বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের পর আমার ইউনিয়নে ৭০টি ঘর সম্পূর্ণ এবং ২শ টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদের টিন ও নগদ অর্থ দেওয়া হলেও, সবাই ঠিকমতো পায়নি। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বরাদ্দ ৩০ কেজি চাল এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। আমরা জানতে পেরেছি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী আসিফের নামে ওই ১০ টন চাল বরাদ্দ দিয়েছেন। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন ।

চালের বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. নাছির উদ্দিন বলেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কার্যালয়ের অফিস সহকারী আসিফের নামে ১০ টন চাল বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত চাল উত্তোলন করেননি তিনি।

চাল বরাদ্দের বিষয়ে অফিস সহকারী হাসিবুর রহমানের কাছে ফোন করা হলে অন্য একজন রিসিভ করে বলেন, তিনি এখানে নেই। ফোন বাড়িতে রেখে বাইরে গেছেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মফিজুল ইসলাম সজলের কাছে একাধিকবার ফোন করা হলে সংবাদকর্মী শুনে তিনি ফোন কেটে দেন।  

চাল বরাদ্দের বিষয়ে কথা বলার জন্য মোল্লাহাট উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা মাফফারা তাসনীনের ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২০
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।