ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কসবায় মামলা তুলে নিতে বৃদ্ধকে মারধরের অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২০
কসবায় মামলা তুলে নিতে বৃদ্ধকে মারধরের অভিযোগ আহত বৃদ্ধা ও অভিযুক্তরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা উঠিয়ে নিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় এক বৃদ্ধের পরিবারের সদস্যদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে পৌরসভার মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।  

শনিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার তিনলাখপীর গ্রামে এ মারধরের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ওই পরিবারের অন্তত ৫ জন।

আহতরা হলেন- বাছির মিয়া (৬০), তার স্ত্রী জাহানারা বেগম (৪৮), ছোট ভাই বাচ্চু মিয়া (৫০), বোন আছিয়া বেগম (৭০) ও মেয়ে জুসনা বেগম (৩০)।  আহতদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাছির মিয়া ও তার স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বাছির মিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা বলেন, আমাদের মালিকানাধীন ও সরকারিভাবে ৯৯ বছরের জন্য লিজ নেওয়া জায়গা থেকে আখাউড়া-আগরতলা রেলওয়ে প্রজেক্টে কসবা পৌরসভার মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল ও উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব শরিফুল হক স্বপনের নেতৃত্বে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে সরবরাহ করে আসছে। এর ফলে আমাদের ৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এ ঘটনায় ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগের অনুলিপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, র‍্যাব-১৪, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবকে দেওয়া হয়।  

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কসবার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে চারটি ড্রেজার মেশিন জব্দ করে ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেন। আমরা ক্ষতিপূরণের দাবি করলে তা দিতে অস্বীকার করেন।  

এ ঘটনায় ২০১৯ সালের নভেম্বরে যুগ্ম-জেলা জজ আদালতে মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েলকে প্রধানসহ ৬ জনকে আসামি করে ৩ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইদুল ইসলাম সজিব, সুমন চৌধুরী, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব শরিফুল হক স্বপনসহ আরও দুইজন।

বাছির মিয়ার ভাই বাচ্চু মিয়া বলেন, এ মামলার পরবর্তী হাজিরার তারিখ ২০২১ সালের জানুয়ারির ৪ তারিখ। এরই মধ্যে পৌরসভার নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসায় মামলাটি নিয়ে দলীয় মনোনয়ন পেতে বেকায়দায় পড়েছেন মেয়র জুয়েল।  

শনিবার দুপুরে প্রায় শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে তিনলাখপীর আসে মেয়র জুয়েল। এসময় মামলাটি তুলে নিতে বাছির মিয়াকে চাপ প্রয়োগ করে জুয়েল ও স্বপন। বাছির মামলাটি তুলতে অস্বীকার করলে তাকে বেদম মারধর করা হয়। এসময় আমি, আমার বোন, ভাবি ও ভাতিজি তাকে বাঁচাতে গেলে আমাদেরও পিটিয়ে আহত করে। পরবর্তীতে খবর পেয়ে পুলিশ আসে।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল বলেন, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।

কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেন জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।