ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান, চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রুটে চলল ট্রেন (ভিডিও)

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২০
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান, চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রুটে চলল ট্রেন (ভিডিও)

নীলফামারী: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ৫৫ বছর পর বাংলাদেশের চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ি রুটে রেল যোগাযোগ চালু হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাঁশি বাজানোর পর চিলাহাটি রেলস্টেশনে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনও বাঁশি বাজিয়ে সবুজ ঝান্ডার সংকেত দেখিয়ে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে চিলাহাটি রেলস্টেশন থেকে মনোরম রূপে সজ্জিত হয়ে ৩০টি মালবাহী রেক, দুইটি গার্ড রেক নিয়ে একটি ইঞ্জিন বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে ছুটে যায় ভারতের হলদিবাড়ির দিকে। রেল বহরে ছিলেন চালক সহিদুল ইসলাম। তিন সহকারী চালক সাইফুল ইসলাম, কমল সরকার ও শাহজাহান আলীকে নিয়ে রেলইঞ্জিন পরিচালনা করেন। তাকে নির্দেশনা দেন পরিচালক (গার্ড) আফজাল হোসেন ও সহিদুল ইসলাম।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি, নীলফামারী-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার, নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রাবেয়া আলীম, রেলওয়ে সচিব সেলিম রেজা, রেলওয়ে পশ্চিম জোনের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ, প্রধান প্রকৌশলী আল ফাত্তা মাসউদুর রহমান, প্রধান সংকেত ও টেলি যোগাযোগ প্রকৌশলী সুশীল কুমার হালদার, প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আহসান উল্লা ভূঞা প্রমুখ।

৬৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন পর বন্ধ থাকা রেলপথে আবারও রেলগাড়ি চলতে দেখতে আসা চিলাহাটি রেলস্টেশন থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত রেললাইনের দুই ধারে হাজার হাজার জনতা হাততালি দিয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে আনন্দে মেতে ওঠে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৪৭ সালের পূর্বেও এ পথে রেলপথ ও সড়ক পথের যোগাযোগ ছিল। এ কারণে ১৯৫৩ সালে আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়। ১৯৬০ সালে স্থলবন্দর চালু হলেও ১৯৬৫ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের কারণে চেকপোস্টটি চালু থাকলেও স্থলবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়। দু’দেশের সীমান্ত পর্যন্ত রেলপথ উপড়ে ফেলা হয়। ২০০২ সালে চেকপোস্টটিও বন্ধ হয়ে যায়। ২০১০ সালে উভয় দেশের সরকার বন্ধ এই রেলপথটি চালুর সিদ্ধান্ত নিলে ২০১৬ সালে জরিপের মাধ্যমে কাজটি শুরু হয়। এরপর ভারতের অংশের ৪.৩৪ কিলোমিটার এবং বাংলাদেশের অংশে দেড় কিলোমিটার স্থাপনের কাজ শেষ হলে সোনালী স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়।

ডোমার রেল রক্ষা কমিটির সভাপতি গোলাম কুদ্দুস আইয়ুব বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যে বড় আকারে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। এই স্থল বন্দরকে কাজে লাগিয়ে তা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। শুধু তাই নয় এ পথে নেপাল ও ভুটানের দূরুত্ব কম হওয়ায় সেখানেও ব্যবসা প্রসারের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ সুযোগ কাজে লাগাতে হলে সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারক মহলকে সচেতনভাবে কর্মপরিকল্পনা করতে হবে।

জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের মধ্যদিয়ে ৫৫ বছর পর দুই দেশেরে রেল যোগাযোগের শুভ সূচনা হয়েছে। আগামী ২৬ মার্চ এই পথে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন হবে। যাত্রীবাহী ওই ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছেড়ে এসে ভারতের শিলিগুঁড়ি পর্যন্ত যাবে।

 

বাংলাদেশ সময়: ২০২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।