ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বারবার বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড দুর্ঘটনা, না উদ্দেশ্যমূলক: ন্যাপ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২০
বারবার বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড দুর্ঘটনা, না উদ্দেশ্যমূলক: ন্যাপ

ঢাকা: কড়াইল, কালশী, কালশী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বাউনিয়াবাদের বস্তিসহ রাজধানীর বিভিন্ন বস্তিতে কয়েকদিন পর পর অগ্নিকাণ্ড নিছক দুর্ঘটনা, নাকি উদ্দেশ্যমূলক তা তদন্ত করে প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)।

সোমবার (২১ ডিসেম্বর) সংগঠনটির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করেন।

ন্যাপ নেতৃবৃন্দ বলেন, আগুন পিছু ছাড়ছে না অসহায় বস্তিবাসীর। গত ১ মাসে রাজধানীতে ছোট-বড় ৫/৬টি বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আর এই অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়েছেন হাজারও মানুষ। সব হারিয়ে বস্তিবাসীরা যখন কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে তখন আবারো সব পুড়িয়ে ছারখার করে দেয় আগুন। ক্ষুধার আগুন নেভাতে গ্রাম থেকে ঢাকায় এসে বস্তিতে বারবার সর্বগ্রাসী আগুনে পুড়ে নিঃস্ব হতে হচ্ছে তাদের। যার দায় কেউ নেয় না।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, কয়েকদিন পর পর বস্তিতে এসব অগ্নিকাণ্ড নিছক দুর্ঘটনা, নাকি উদ্দেশ্যমূলক তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। সাধারণত বস্তিগুলো সরকার বা ব্যক্তি মালিকানাধীন পরিত্যক্ত জমিতে গড়ে ওঠে। অনেক সময় ভূমি মালিক জমি খালি করার জন্য বস্তিতে আগুন লাগিয়ে দেন। এমন ঘটনা পূর্বেও ঘটেছে। তাই সরকারের উচিত তদন্ত করে অগ্নিকাণ্ডের রহস্য বের করা। পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের সহায়তায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, অর্থাৎ সিটি করপোরেশনকে এগিয়ে আসতে হবে।

'প্রভাবশালীরা বস্তি উচ্ছেদ করতে অনেক সময়ই কৌশল হিসেবে আগুন ধরিয়ে দেয়। অথচ দেশের জিডিপিতে তাদের ভূমিকাও কম নয়। যখন পুড়ছে না, তখনো বস্তির জীবন এক যুদ্ধ। বাংলাদেশিদের প্রাণশক্তির পরিচয় পেতে গুলশান-বনানীতে গিয়ে লাভ নেই, যেতে হবে বস্তিতে বস্তিতে। বড় বস্তি মানে বারবার আগুনে পোড়ার ইতিহাস এবং বারবার আগুনকে পরাজিত করে আবার জীবনের খুঁটি মাটিতে পোঁতার ইতিহাস। সারা বছরই ঘুরেফিরে বিভিন্ন বস্তিতে আগুন লাগার খবর আসে। লাগাতার ও পালাক্রমে আগুন লাগার কিংবা লাগানোর রহস্যভেদ করার কোনো কর্তৃপক্ষ খুঁজে পাওয়া যায় না। যা রাষ্ট্রে ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই নয়।

ন্যাপের বিবৃতিতে বলা হয়, সমাজের প্রভাশালী, ভূমিদস্যু আর লুটেরা শ্রেণিরাই সরকারি জায়গায় বস্তি বসিয়ে ভাড়া তুলে আরও ধনবান হন। বস্তির লোককে জিম্মি করে রাজনৈতিক প্রতাপ দেখান। মৌলিক অধিকারের মুখে ছাই মেখে সরকারি সংস্থার বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানি তাদের কিনতে হয় বাজারমূল্যের চাইতে বেশি হারে। যেহেতু সেসব তাদের অবৈধ পথে পেতে হয়। বস্তিনির্ভর অর্থনীতির শেষ দৃশ্যে আসে আগুন। হানাদারদের পোড়ামাটি নীতি বাস্তবায়নের অবাধ ক্ষেত্রও এই বস্তি। আগুন দিয়ে মানুষগুলোকে তাড়িয়ে সেই পোড়া মাটিতে বহুতল ভবন নির্মাণের পাঁয়তারা চলে। আমরা কেবল আগুনটা দেখি, আগুন ধরার আগের ও পরের এই তেলেসমাতিটা সবার চোখে পড়ে না।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২০
আরকেআর/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।