ঢাকা: বিশিষ্ট সাংবাদিক ও প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) দুপুর সোয়া দুইটার দিকে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।
দুপুর দেড়টার দিকে মিজানুর রহমানের মরদেহবাহী গাড়িটি শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পৌঁছায়। সেখানে তার স্ত্রী, সন্তান, পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন ও প্রথম আলোর সহকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১০মিনিটে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে মিজানুর রহমান খানের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জানাজায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, আইনজীবী ও সাংবাদিকেরা অংশ নেন।
এরপর মরদেহ নেওয়া হয় সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ)। সেখানে বেলা ১১টার দিকে তার দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির বর্তমান ও সাবেক নেতারা অংশ নেন। মিজানুর রহমান খান ডিআরইউর সিনিয়র সদস্য ছিলেন।
এ ছাড়া ডিআরইউসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকেরা জানাজায় অংশ নেন। জানাজা শেষে মিজানুর রহমান খানের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সাংবাদিক নেতারা।
ডিআরইউতে জানাজা শেষে মরদেহ নেওয়া হয় জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে। সেখানে তৃতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় সাংবাদিক নেতারা ছাড়াও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অংশ নেন। তারা মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
পরে মিজানুর রহমান খানের মরদেহ নেওয়া হয় কারওয়ান বাজারে তার কর্মস্থল প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে। সেখানে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ সহকর্মীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সোমবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিজানুর রহমান খান মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। তিনি মা, স্ত্রী, তিন সন্তান, পাঁচ ভাই, তিন বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মিজানুর রহমান খান করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার নমুনা পরীক্ষায় গত ২ ডিসেম্বর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তিনি ৫ ডিসেম্বর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি হন। তার শারীরিক সমস্যা বাড়লে সেখান থেকে ১০ ডিসেম্বর তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত শনিবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।
সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান ১৯৬৭ সালের ৩১ অক্টোবর ঝালকাঠির নলছিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বরিশালের ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন ১৯৮৮ সালে। দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতায় থাকা মিজানুর রহমান খান ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত যুগান্তরের বিশেষ সংবাদদাতা ও সহকারী সম্পাদক ছিলেন। এরপর সমকাল-এ উপসম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। প্রথম আলোয় যোগ দেন ২০০৫ সালের ১ নভেম্বর।
মিজানুর রহমান খানের দুই ভাইও সাংবাদিক। তারা হলেন-সিদ্দিকুর রহমান খান ও মসিউর রহমান খান। মসিউর রহমান খান ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২১
এমএইচ/ওএইচ/