খুলনা: খুলনা মহানগরীর হরিণটানা রিয়াবাজার এলাকায় ভাড়া না পেয়ে ৫ দিন শিশু সন্তানসহ ভাড়াটিয়াকে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
তালাবদ্ধ অবস্থায় বালতির পানিতে ডুবে শিশুটির মর্মান্তিক মৃত্যু হলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) শিশুটির বাবা-মা এ ঘটনায় বাড়িওয়ালা মো. নওশেরকে দায়ী করে থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ তা গ্রহণ না করে অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে। পরে তারা আদালতে এসে আইনজীবীদের কাছে অভিযোগ দেন।
জানা যায়, ২০২০ সালে ডিসেম্বর মাসে কাঠের ডিজাইন মিস্ত্রি ইমদাদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী তামান্না মাসে চার হাজার টাকা চুক্তিতে রিয়াবাজার এলাকায় একতলা বাড়ির দুইটি কক্ষ ভাড়া নেন। কিন্তু জানুয়ারি মাসের অগ্রিম ভাড়া দিতে না পারায় ৬ জানুয়ারি থেকে ঘরে শিশু সন্তানসহ তামান্নাকে তালাবদ্ধ করে রাখে বাড়িওয়ালা নওশের। এসময় তামান্নার স্বামী মোংলা ঝিউধরা এলাকায় কাঠের কাজ করছিলেন।
ইমদাদুল ইসলাম বলেন, আয়-রোজগারহীন ও নিম্ন আয়ের মানুষ। সংসারে অভাব অনটন থাকলেও সন্তানকে জীবন দিয়ে ভালোবাসতাম। কিন্তু বাড়িওয়ালার নিমর্মতায় আজ সেই সন্তানকে হারাতে হলো।
তামান্না ইসলাম জানান, তালাবদ্ধ অবস্থায় গত ১১ জানুয়ারি দুপুরে শিশুটি হঠাৎ খেলতে গিয়ে বালতির পানির মধ্যে উল্টে যায়। ঘরে এসে তিনি শিশুটিকে ওই অবস্থা থেকে উদ্ধার করলেও বাইরে থেকে ঘর তালাবদ্ধ থাকায় চিকিৎসকের কাছে নিতে পারেননি।
মায়ের আকুতি, আমার মতো এভাবে আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়। আর কোনো পাষণ্ড বাড়িওয়ালা যেন এভাবে অন্যায় করতে না পারে। এজন্য তিনি বাড়িওয়ালার বিচার দাবি করেন।
স্থানীয় জলমা ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম লিটন জানান, শিশুটির মা জানালা দিয়ে চিৎকার দিলে আশ-পাশের লোকজন তালা ভেঙে তাদেরকে উদ্ধার করেন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিশুটি মারা যায়। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম জানান, অসহায় বাবা-মা থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২১
এমআরএম/এএটি