ঢাকা: বিদেশফেরত শ্রমিকরা কাজ না পেলে ভাটা পড়বে রেমিটেন্সে। রোজগার কমে বিপাকে পড়বে বহু পরিবার।
রোববার (১৭ জানুয়ারি) এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম আয়োজিত ‘সাম্প্রতিক প্রবাসী আয়-রেমিট্যান্স প্রবাহ: এত টাকা আসছে কোথা থেকে?’ শীর্ষক একটি ভার্চ্যুয়াল সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, শ্রমিকরা কাজ হারিয়ে সব সঞ্চয় নিয়ে দেশে ফিরেছেন। করোনার কারণে ভিসা নবায়ন ও বিমানের টিকিট কেনার হিড়িকও ছিল না। তাই সার্বিক দৃষ্টিতে রেমিটেন্সের আকার বেড়েছে। কিন্তু এসব শ্রমিক বিদেশে কাজে ফিরতে না পারলে হিতে বিপরীত হবে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, একটি স্টপ ইফেক্ট আছে, একটা প্রো ইফেক্ট আছে। স্টপ ইফেক্টটা অনেক বড়। যদি কম যায় আগামীতে যে ফুট প্রিন্টটা পড়বে সেটা আমরা আগেই বলে রাখছি। এটা নির্ভর করবে আগামীতে মহামারির পরে এসব শ্রমিক আবার বিদেশে কাজে যাবে কি-না।
গবেষকরা বলেছেন, বিদেশে থাকা বেকার শ্রমিকদের টাকা এখনো হাতে পান না ৬১ শতাংশ পরিবার। আগামীতে জনশক্তি রপ্তানি নিয়ে বিপদে পড়তে হবে বাংলাদেশকে।
মোস্তাফিজুর রহমান সূচনা বক্তব্যে বলেন, কালো টাকা সাদা করতে অনেকেই বৈধ চ্যানেলে বিদেশ থেকে অর্থ পাঠাচ্ছেন। করোনার মধ্যে হুন্ডি ব্যবসা বন্ধ থাকা, হজের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ আসছে দেশে। সরকারের দুই শতাংশ প্রণোদনার সঙ্গে বিকাশ ও আরও বেশ কয়েকটি কোম্পানি ১ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ায় বৈধপথে রেমিটেন্স বেড়েছে।
রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, কখনোই ভাবা উচিত না যে রেমিটেন্সের ঊর্ধ্বগতি মানে বিদেশে শ্রমিকরা ভালো আছে। অভিবাসীদের পরিবারগুলো মাছ, মাংস ও খাদ্য কমিয়ে বিভিন্ন ভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা মেনে চলছেন।
গেলো ছয়মাসে কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশে গেছেন ১ লাখ ৮৩ হাজার কর্মী।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান বলেন, প্রবাসীদের সেবা রপ্তানিকারক হিসেবে দেখা উচিত। তাই করোনার টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে তাদেরকেও।
করোনা কালে আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য কমলেও বেড়েছে প্রবাসী আয়। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৮ শতাংশ। অথচ মহামারির ধাক্কায় কাজ হারিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন প্রায় ৫ লাখ কর্মী। যার পুরো অংশই এখনো বেকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২১
এসই/এইচএডি