চাঁদপুর: সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, যেকোন দুর্যোগে সেনাবাহিনী কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে। করোনা চলাকালীন সেনাবাহিনী উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে।
দেশে যখন করোনা প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় তখন প্রধানমন্ত্রী এ অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন এবং সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়, তখন সেনাবাহিনী করোনা প্রতিরোধে স্বতস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করে।
রোববার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে সেনা প্রধান তার নিজ গ্রাম চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার দক্ষিণ টরকী গ্রামে তার বাবার নামে নব নির্মিত ‘আব্দুল ওয়াদুদ সরকার ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র’ উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৬২ জেলায় কাজ করে। এর মধ্যে প্রত্যেক জেলায় ১১শ থেকে ১২শ সেনা সদস্য গাড়ি নিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে খাদ্য বিতরণসহ অন্যান্য সরকারি কাজ বাস্তবায়নে সহায়তা করেছে। এছাড়াও অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করে করোনার কারণে চিকিৎসাবঞ্চিত অন্তঃসত্ত্বা মা ও শিশুকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে এবং মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা সৃষ্টি করেছে।
রোহিঙ্গা সমস্যা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিয়ানমার সেনাদের সঙ্গে আমাদের সবসময় যোগাযোগ আছে। কোনো সমস্যা হলে নিজেরাই তাদের সঙ্গে কথা বলে সমাধান করি। এই মুহূর্তে কোনো কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এটি একটি রাজনৈতিক বিষয়। এ ব্যাপারে আমাদের সরকার অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে আসছে। আগামী দিনেও করবে।
সেনা প্রধান আরও বলেন, আমি সেনা প্রধান হওয়ার পরেও সীমাবদ্ধতার কারণে নিজ এলাকায় আসতে পারি না। হাসপাতাল উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে আপনাদের মাঝে আসতে পেরেছি। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দায়িত্ব হলো এলাকার উন্নয়ন করা। আমরা সরকারি কর্মচারী। আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। তার মধ্যেও কেউ যদি আমাদের কাছে আসে তাদের সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রুহুল, জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জনা খান মজলিস, পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহবুবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ কুদ্দুছ ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনের আগে হাসপাতাল সম্পর্কে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওসমান সরোয়ার উপস্থিত সুধীদের উদ্দেশে ব্রিফিং করেন। পরে সেনা প্রধান হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ করেন।
সেনাবাহিনীর নিজস্ব হেলিকপ্টারে করে সেনা প্রধান অনুষ্ঠান স্থলে আসলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ অন্যান্য সুধীমহল তাকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান। অনুষ্ঠান শেষে তিনি পুনঃরায় হেলিকপ্টারে করে কুমিল্লার উদ্দেশে চাঁদপুর ত্যাগ করেন।
সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে এই হাসপাতাল ভবনটি নির্মাণ করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২১
আরএ