যশোর: দিন মজুরির টাকায় স্ত্রী সন্তান নিয়ে ভালোই কাটছিল বিপ্লবের। স্বপ্ন ছিল টাকা জমিয়ে খুঁটির খুপরি ছেড়ে ইটের ঘরে উঠার।
ইটের ঘরের আশা দুরাশা হলো বিপ্লবের। ভিক্ষাকে পেশা হিসেবে নিতে না পেরে দুই হাজার টাকায় বাড়ির পাশে চায়ের দোকান বসান তিনি। স্ত্রী জোহরা বেগম ধরেন সংসারের হাল। রাস্তায় কর্মসূচির কাজ করেন তিনি। স্কুল পড়ুয়া একমাত্র ছেলেকে নিয়ে এভাবে দিন কাটছে পরিবারটির।
হঠাৎ একদিন বিপ্লবের বাড়িতে হাজির যশোর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২, মণিরামপুর সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা। বিপ্লবের পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া দুই শতক ভিটায় নিজেদের অর্থায়নে সেমি পাকাঘর করে দেওয়ার আশ্বাস দেন তারা। আশ্বাস অনুযায়ী, এক লাখ ৭২ হাজার টাকায় সংযুক্ত টয়লেট, রান্নাঘর ও বারান্দাসহ রঙিন টিনের দুই কক্ষের ইটের ঘর নির্মিত হয়েছে বিপ্লবের ভিটায়। ঘর পেয়ে হাসি ফুটেছে বিপ্লবের মুখে।
বিপ্লব মণিরামপুর উপজেলার নাগোরঘোপ গ্রামের মৃত শহিদুল ইসলাম পাটোয়ারীর ছেলে।
যশোর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২ এর ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী অরুন কুমার কুণ্ডু বাংলানিউজকে বলেন, ঘর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ইউএনওর সহায়তায় বিপ্লবের খোঁজ পাই। মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের ঘর দেওয়া কর্মসূচির আওতায় আমরা ১৭ জন কর্মকর্তা নিজেদের অর্থায়নে এক লাখ ৭২ হাজার টাকায় তাকে একটি ঘর করে দিচ্ছি। দ্রুত ঘরটি হস্তান্তর করা হবে। সমাজের বিত্তবানদের এমন উদ্যোগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এ কর্মকর্তা।
উপকারভোগী বিপ্লব বাংলানিউজকে বলেন, আমগাছ থেকে পড়ে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। দুই বছর চার মাস ধরে ভুগছি। দুই পা অকেজো হওয়ায় এখন হুইলচেয়ারে চলাফেরা করি। বংশে কেউ ভিক্ষুক ছিল না। তাই সেই কাজ করতে পারিনি। বাড়ির সামনে একটা দোকান দিছি। তাতে দিন চলে যাচ্ছে। বাঁশের খুঁটি আর টিনের বেড়ার ঘরে কষ্টে থেকেছি। ইটের ঘরে ঘুমাবো ভাবতে পারিনি। পল্লীবিদ্যুতের স্যারেরা আমারে ঘর দিছে। আমি এখন সুখে আছি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২১
ইউজি/আরবি