সিলেট: হত্যার পর ভ্যানিটি ব্যাগে ঢুকিয়ে গুম করতে নদীতে ফেলা হয়েছিল নবজাতকের মরদেহ। কেবল একটি কাগজ ছিল এ ঘটনার অদৃশ্য সাক্ষী হয়ে।
গত বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ গ্রামের পার্শ্ববর্তী বড়গাং নদী থেকে এক নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আলামত হিসেবে ভ্যানিটি ব্যাগে থাকা দর্জি দোকানের একটি স্লিপ ধরে স্বপ্রণোদিত হয়ে হত্যার রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা চালান পুলিশ সদস্যরা।
এর একদিন পর শুক্রবার রাতে জৈন্তাপুর নিজপাট ইউনিয়নের নয়াবাড়ি থেকে ওই নবজাতকের হন্তারক জন্মদাতা গোলাপ মিয়াকে (২২) গ্রেফতার করা হয়। গোলাপ মিয়ার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায়।
পুলিশ জানায়, উদ্ধার হওয়া নবজাতকের মরদেহের ময়না তদন্ত ও ডিএনএ পরীক্ষা করার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পাশাপাশি ভ্যানিটি ব্যাগে পাওয়া দর্জি দোকানের একটি পুরনো স্লিপ ধরে তদন্ত চলে। সেই সঙ্গে নারী সোর্সের মাধ্যমে খবর নিয়ে গর্ভধারিণী কিশোরী মায়ের খোঁজ মেলে। এরপর আসামিকেও গ্রেফতারে সক্ষম হন তদন্তে নিয়োজিত জৈন্তাপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজিজ আহমদ।
জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসীন আলী বাংলানিউজকে বলেন, বছর দুয়েক আগে জৈন্তাপুর উপজেলার রহিমাকে বিয়ে করেন গোলাপ মিয়া। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে নয়াবাড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন তারা। প্রতিবন্ধী কিশোরী শ্যালিকাকে তাদের বাড়িতে রেখে তার শাশুড়ি চলে যান সৌদি আরবে। ৭ মাস পর তিনি দেশে ফেরেন। ইতোমধ্যে গোলাপ মিয়া প্রতিবন্ধী শ্যালিকাকে ধর্ষণ করেন। শ্যালিকার গর্ভের বাচ্চা গোপনে প্রসব করাতে গত ২৫ জানুয়ারি অন্যত্র নিয়ে যান গোলাপ মিয়া। জন্মের পর নবজাতককে হত্যা করেন তিনি। নবজাতকের মরদেহ গুম করতে ওই নারীর ব্যবহৃত ভ্যানিটি ব্যাগে ঢুকিয়ে বড়গাং নদীতে ফেলে দেন।
ওসি আরও বলেন, ব্যাগের ভেতরে পাওয়া দর্জির দোকানের স্লিপ ধরে তদন্তে নেমে গোলাপ মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর শিশুটিকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। এ ঘটনায় গোলাপ মিয়ার শাশুড়ি বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণ, হত্যা ও মরদেহ গুম করার অপরাধে মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার শিকার ওই কিশোরী আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তবে আসামির সঙ্গে নবজাতকের ডিএনএ পরীক্ষার সামঞ্জস্য মিলিয়ে দেখার অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২১
এনইউ/এমজেএফ