ঢাকা: স্বাস্থ্যখাত নিয়ে জাতীয় সংসদে সমালোচনা মুখর হয়ে উঠে বিরোধী দলের সংসদ সসদ্যরা। স্বাস্থ্যখাত দুনীতির ডিপোটে পরিণত হয়েছে বলেও তারা অভিযোগ করেন।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত শেখ হাসিনা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো উত্থাপনের সময় বিরোধী দল জাতীয় পার্টি এবং বিএনপির সংসদ সদস্যরা এ সমালোচনা করেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।
বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, স্বাস্থ্যখাতে বেহালদশা। এ খাতের দুর্নীতি ফিরিস্তি বলে শেষ করা যাবে না। স্বাস্থ্যখাত দুর্নীতির ডিপোতে পরিণত হয়েছে। করোনার ভ্যাকসিন কত দামে কিনলাম? বাণিজ্য হচ্ছে কিনা জানা দরকার। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকরা ঠিকমত কাজ করছে কিনা? ডিউটির সময় অন্য জায়গায় প্রাকটিস করে। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বসে হাসপাতালের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুর্নীতির ডিপো হয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর নামে যে বিশ্ববিদ্যালয়টি হতে যাচ্ছে সেটি সত্যিকার অর্থে কাজের বিশ্ববিদ্যালয় হতে হবে। নাম ও কামের মিল থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধুর নামে নামে যে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়টি হয়েছে সেটি কোন গ্রেডেই নেই। দলীয় পরিচয়ে নিয়োগ করা হয়েছে এ কারণে এ বিশ্ববিদ্যায় কোনো গ্রেডে নেই। যে উদ্দেশ্য-লক্ষ্য নিয়ে স্থাপন করা হচ্ছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাতে এ ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ নেন এবং প্রধানমন্ত্রী যথাযথ নির্দেশনা দেন তবে এটি কাজ করবে।
সংরিক্ষত আসনের বিএনপির সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয় করে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হয়তো কমবে। কিন্তু স্বাস্থ্যখাতে অপ্রতুল বরাদ্দ, চরম দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা সেগুলো কী কমবে? ব্যক্তিঘাতে চিকিৎসার খরচ বাংলাদেশে বাড়ছে। পৃথিবীর কোনো দেশ করোনা নিয়ে ব্যবসা করেনি। বাংলাদেশে সেটি দেখেছি। নতুন নতুন আইন করে কী হবে যদি মানুষ সেবা না পায়। নকল এন৯৫ মাস্ক যারা দিয়েছিলো সেই জেএমআই থেকে এবার ইনজেকশনের সিরিঞ্জ নেওয়া হচ্ছে। কোম্পানিটি এত শক্তিশালী! স্বাস্থ্যখাতে দুনীতির সঙ্গে যুক্ত দুই একটি চুনো পুটি ছাড়া কোনো রাঘববোয়ালকে ধরা হয়নি।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণায় বেশি আত্মনিয়োগ করা উচিত। গবেষণার জন্য বরাদ্দ বেশি দেওয়া উচিত। বাংলাদেশে চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে বিশেষ করে বিশেষায়িত সেবার ক্ষেত্রে মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থখাতে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। দুর্নীতি কমানো দরকার। মন্ত্রণারয়ের কাজে স্বচ্ছতা দরকার। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকের অভাব রযেছে। চিকিৎসক বাড়াতে হবে।
গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির কথা সংবাদে আসছে। কারা করছে? এ দুঃসাহস কিভাবে পায়? যারা জড়িত তাদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সব দোষ আসে মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে। কিন্তু আমলাদের কিছু হয় না। তারা এত শক্তিশালী! অথচ দুর্নীতি হয় প্রকল্প পরিচালক লেভেলে। আজ পর্যন্ত একজন সচিব বা প্রকল্প পরিচালকের কিছু হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২১
এসকে/ওএইচ/