ঢাকা: করোনা ভাইরাসের কারণে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা অবস্থা বুঝে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকে লক্ষ্য রেখে কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের চলতি বছরের প্রথম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালে আমরা স্বাধীণতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে পদার্পণ করেছি। স্বাধীনতার রজতজয়ন্তীতেও ক্ষমতায় ছিলাম। সৌভাগ্য যে সুবর্ণজয়ন্তীতে ক্ষমতায় থাকতে পেরেছি। সুবর্ণজয়ন্তী পালনে আমাদের অনেক আকাঙ্ক্ষা ছিলো। বছরব্যাপী আমরা অনুষ্ঠান করবো। অনেক অনুষ্ঠান আমাদের চিন্তায় আছে। করোনার দ্বিতীয় ওয়েব দেখা দিয়েছে। আমাদের এ জন্য সুরক্ষার ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। আমরা সব কর্মসূচি নিয়েছি। তবে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেব। মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকে লক্ষ্য রেখে আমরা কর্মসূচি পালন করবো। কারণ আমাদের কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গৃহহীন মানুষকে ঘর তৈরি করে দিচ্ছি। সাড়ে তিন লাখ মানুষের ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এখনও এক লাখ মানুষের ঘর তৈরির কাজ চলমান আছে। যাদের জমি নেই, জমি না পাওয়া গেলে জিম কিনে আমরা ঘর তৈরি করে দেবো। মুজিবের বাংলায় একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না। এ দেশের কেউ গৃহহীন থাকবে না। দারিদ্র্যমুক্ত করতে হলে একজন মানুষের ঠিকানা থাকতে হয়। এর জন্য একটা ঘর প্রয়োজন। আজকে বাংলাদেশকে ডিজিটাল করতে পেরেছিলাম বলেই করোনার মধ্যে আমরা আমাদের কাজ করে যেতে পারছি।
বিএনপির সমারোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মাসেতু নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলে। শুনলে হাসি পায়। যারা দেশকে দুর্নীতিতে ৫ বার চ্যাম্পিয়ন করেছিলো। এতিমের টাকা মেরে খাওয়ার দায়ে সাজা হয়ে জেল খাটতে হয়। সেই দল নেতৃত্বে থাকলে উন্নয়ন হবে কী করে? দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারির মামলা ও গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এরা যখন কোন দলের নেতৃত্বে থাকে, সাজাপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামির সেই দল জনগণের কাজ করবে কীভাবে? বিএনপির এখন নেতৃত্বের অভাব। কাজেই যত বক্তৃতা দিক আর যত কথা বলুক সেই দলের প্রতি মানুষের আস্থা থাকবে কীভাবে?
তিনি বলেন, এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচন হচ্ছে, মানুষ শান্তিতে ভোট দিচ্ছে। তাদের সময় ছিলো ১০টা হুন্ডা, ২০টা গুন্ডা, নির্বাচন ঠাণ্ডা। যাদের গায়ে এতো কালি তারা এত কথা বলে কীভাবে? ওই সময় নির্বাচনে কী জনগণের আদৌ ভোট দেওয়ার অধিকার ছিলো? ছিলো না। মিলিটারি শাসকেরা যেটা ঠিক করে দিতো সেটাই হতো। না হলে পরিবর্তন করা হতো। রেজাল্টও পরিবর্তন হয়েছে। অনেককে কিন্তু পদত্যাগ করতেও হয়েছে। আমরা আন্দোলন করেছি। জনগণ আন্দোলন করেছে, যার কারণে তাদের পদত্যাগ করতে হয়েছে। পরবর্তীদের এতিমের অর্থ আত্মসাতের জন্য সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে। পদ্মা সেতু নিয়ে এত কথা। অথচ এরকম একটি কাজ নিজেদের অর্থায়নে করলাম। তার প্রশংসা তো করতেই পারলো না। উল্টো বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন জোড়া তালি দিয়ে পদ্মা সেতু করা হয়েছে। কেউ এতে উঠবেন না। তাহলে নদীটা পার হবে কীভাবে? সেতু দিয়ে পার না হলে তো নৌকায়ই যেতে হবে। উপায় তো নেই। নৌকায় চড়তে হবে। আমাদের নৌকা অনেক বড়, কোনো অসুবিধা নেই। আমাদের নৌকা বড় সবাইকে নেবো। তবে বেছে নেবো, নৌকায় বসে নৌকা যেন ফুটো না করে।
সরকারের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে নানাভাবে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দেশে-বিদেশে নানাভাবে নানা অপপ্রচার চালানোর প্রচেষ্টা। তবে যে যাই বলুক—শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আমি বিশ্বাস করি সততা নিয়ে কাজ করলে। আর সেই কাজের সুফল জনগণ পেলে সেটাই তৃপ্তি। কেউ আন্তরিকতার সাথে কাজ করলে অবশ্যই দেশকে উন্নতি করা যায়। আমরা সুষ্ঠু ও পরিকল্পিতভাবে দেশ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। যার সুফল এ দেশের মানুষ পাবে।
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন নিলেও মাস্ক পরার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২১
এসকে/এমজেএফ