ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সুদসহ পাওনা টাকা পরিশোধের পরেও ভায়রার হাতে খুন হন রাজিব

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২১
সুদসহ পাওনা টাকা পরিশোধের পরেও ভায়রার হাতে খুন হন রাজিব

ঢাকা: রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাজলায় পাওনা টাকা ও সুদের টাকা পরিশোধের পরেও ভায়রার ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন রাজিব নামে এক ব্যক্তি।  

পরিবারের সদস্যদের দাবি, হত্যাকাণ্ডের সময় নিহত রাজিরের ভায়রা ইজার সঙ্গে আরও ছিলেন তার ভাই মোস্তাকুর ও তাদের বন্ধু কালা জরিফ।

মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গের সামনে আবেগাপ্লুত হয়ে নিহত রাজিবের মামা আবুল কাশেম বাংলানিউজকে বলেন, রাজিবের বাবা শাহআলম অনেক আগেই মারা গেছেন। মা রাহিমা বেগম ও এক মেয়েকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি শরিয়তপুর জেলার ডামুড্ডা উপজেলার উত্তর শহীদ বস্তাতে থাকেন। রাজিব তার স্ত্রী মরিয়ম ও তাদের এক মাস বয়সী ছেলেকে নিয়ে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকার কাঠের মসজিদ এলাকায় মনিরের টিনসেড বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

তিনি বলেন, রাজিব প্রথমে ঢাকায় এসে বাসের হেলপার হিসেবে কাজ করতেন। পরে স্যানেটারি মিস্ত্রীর কাজ করতেন। তিনি পরিবারের কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করেন। এরপর থেকে আমাদের সঙ্গে রাজিবের তেমন যোগাযোগ ছিল না।  

রাজিবের স্ত্রী মরিয়মের বরাত দিয়ে আবুল কাশেম আরও বলেন, মরিয়মের ছোট বোন রোকসানা ও তার স্বামী ইজা জুরাইন এলাকায় থাকেন। বেশ কয়েকদিন আগে রাজিব তার ভায়রা ইজার কাছ থেকে সুদে ২০ হাজার টাকা নেন। ২০ হাজার টাকা দেওয়ার পরেও সুদের আট হাজার টাকাও পরিশোধ করেছেন রাজিব। এর পরেও রাজিবের কাছে ইজা আরও টাকা দাবি করে আসছিলেন। এ বিষয় নিয়ে ইজার সঙ্গে রাজিবের বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জের ধরেই সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে ভাই মোস্তাকুর ও তার বন্ধুকে নিয়ে রাজিবের বাসায় এসে সুদের আরও টাকা দিতে চাপ দিতে থাকেন ইজা। এক পর্যায়ে হঠাৎ করে পাশের কক্ষ থেকে রাজিবের চিৎকার শুনে তার স্ত্রী মরিয়ম ছুটে এসে দেখতে পান ইজা রাজিবকে ছুরিকাঘাত করছেন। এ সময় ইজাকে মরিয়ম বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। পরে ইজাসহ তিনজন পালিয়ে গেলে রাজিবকে দ্রুত উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।  

মরিয়মের দুই হাত ছুরিকাঘাতে কেটে যাওয়ায় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে তিনি বাসায় আছেন বলেও জানান রাজিবের মামা কাশেম।

এ বিষয়ে যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শরিফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, রাজিবকে হত্যার ঘটনায় সকালে তার স্ত্রী মরিয়ম দুইজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে।
 
তিনি বলেন, সুদের ২০ হাজার টাকা নিয়েই রাজিবের সঙ্গে তার ভায়রার দ্বন্দের সৃষ্টি হয়। বেশ কিছুদিন ধরে এনিয়ে পারিবারিকভাবে তাদের সম্পর্ক ভালো ছিল না। তবুও পুলিশ এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত করছে।

ঢামেক হাপাতালের মর্গ সূত্র জানা যায়, ময়নাতদন্ত শেষে রাজিবের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রাজিবের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত থাকলেও বুকের আঘাতটি খুব গভীর ছিল।

যাত্রাবাড়ীর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ভায়রার হাতে ভায়রা খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় নিহত রাজিবের স্ত্রীও আহত হয়েছেন। হত্যার কারণ অনুসন্ধানে পুলিশ কাজ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২১ 
এজেডএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।