বরিশাল: বরিশাল জেলায় কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ‘নো মাস্ক-নো সার্ভিস’ প্রচারণা বাস্তবায়ন ও স্বাস্থ্য বিধি পালনে মহানগরসহ সকল উপজেলায় একসঙ্গে মোবাইল কোর্ট ও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার ড. অমিতাভ সরকার এর পরিকল্পনায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জসীম উদ্দীন হায়দার এর নির্দেশনায় এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
এসময় একসঙ্গে বরিশাল মহানগরসহ সকল উপজেলায় ১৩টি মোবাইল কোর্ট ও সচেতনতা কার্যক্রমে ৫০টি পৃথক মামলায় ৫০ জন ব্যক্তি ও মোটর চালক আরোহীকে ১৬ হাজার ৯৫০ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেল সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল নগরের রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড, চৌমাথা, সদর রোড, গীর্জা মহল্লা, চকবাজার, নথুল্লাবাদ, পুলিশ লাইন, আমতলা এবং কাকলীর মোড় এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী সুজা, মো. আবদুল হাই, মো. নাজমূল হুদা এবং মো. মারুফ দস্তেগীরের নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়।
এসময় জেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রচারপত্র নো-মাস্ক নো-সার্ভিস সম্বলিত ফেস্টুন, খেটে খাওয়া মানুষদের মধ্যে মাস্ক ব্যবহারে উৎসাহিতকরণ এবং ফ্রি মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়।
অভিযান পরিচালনাকালে মাস্ক না পড়ে ঘোরাফেরা করার মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করা এবং সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ অমান্য করায় ২০টি মামলায় ২০ জন পথচারী ও মোটরসাইকেল আরোহীকে আট হাজার ৭০০ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সংক্রান্ত সামগ্রী যেমন মাস্ক, স্যানিটাইজার ইত্যাদির অতিরিক্ত দাম না রাখার জন্য বিভিন্ন ফার্মেসির মালিকদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
এদিকে বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের চৌমাথা ও গড়িয়ার পাড় এলাকায় কোভিড ১৯ সংক্রমণ রোধে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদি হাসানের নেতৃত্বে সচেতনতামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি জনগণের মধ্যে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়।
আগৈলঝাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নির্বাহী অফিসার মো. আবুল হাশেমের নেতৃত্বে চারটি মামলায় চার জন ব্যক্তিকে স্বাস্থ্যবিধি
লঙ্ঘন করার অভিযোগে ৭০০ টাকা অর্থদণ্ড জরিমানা করা হয়।
গৌরনদী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাসের নেতৃত্বে পাঁচটি মামলায় পাঁচ জন ব্যক্তিকে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
উজিরপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জয়দেব চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ছয়টি মামলায় ছয় জন ব্যক্তিকে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে চার হাজার ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। অভিযান চলাকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করেন।
বানারীপাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নির্বাহী অফিসার রিপন কুমার সাহা’র নেতৃত্বে ছয়টি মামলায় ছয় জন ব্যক্তিকে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে ৯০০ টাকা অর্থদণ্ড আরোপ করা হয়।
বাবুগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নির্বাহী অফিসার মো. আমীনুল ইসলামের নেতৃত্বে ছয়টি মামলায় ছয় জন ব্যক্তিকে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে এক হাজার ১৫০ টাকা অর্থদণ্ড আরোপ করা হয়।
বাকেরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিনটি মামলায় তিন জন ব্যক্তিকে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
এছাড়া মেহেন্দিগঞ্জ, হিজলাসহ জেলার প্রতিটি উপজেলার উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ও সড়কে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে পরামর্শ, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, বরিশালবাসীর কল্যাণে কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য দ্বিতীয় সংক্রমণ প্রতিরোধ ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় জেলা প্রশাসনের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪১ ঘণ্টা, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
এমএস/কেএআর