ঢাকা: ভূমি সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক চিহ্নিত সমস্যাগুলোর যথাযথ সংশোধন প্রস্তাব দেওয়া হবে, যেন পরবর্তীতে এ বিষয়ে আর সমস্যা সৃষ্টি না হয়। ভূমিমন্ত্রীর এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে।
বৃহস্পতিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, ২০০১ এর অধিকতর সংশোধনী’ বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, ২০০১ এর উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকালে চিহ্নিত সমস্যাগুলো হলো:
(ক) অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে জেলা জজ বা অতিরিক্ত জেলা জজ কর্তৃক প্রদত্ত কতিপয় সিদ্ধান্ত/রায় আইনগত কারণে পরবর্তী আপিলের সুযোগ হতে বঞ্চিত রয়েছে।
(খ) প্রকাশিত প্রত্যর্পণযোগ্য সম্পত্তির (‘ক’ তফশিল) তালিকায় কতিপয় ভুল হওয়া এবং কতিপয় সম্পত্তি বাদ পড়ে যাওয়ায় জনস্বার্থে প্রকাশিত তালিকার সংশোধনী এবং বাদ পড়া সম্পত্তির তালিকা প্রকাশের প্রয়োজন রয়েছে। উক্তরূপ সংশোধন ও তালিকা প্রকাশের সময়সীমা ২৬/০২/২০১৪ তারিখে অতিক্রান্ত হয়েছে।
(গ) প্রত্যর্পণযোগ্য সম্পত্তিতে আইনের ধারা ১০ এর বিধান মোতাবেক দাবিদারগণের দাবির আইনগত সময়সীমা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৩১/১২/২০১৩ তারিখের এবং সংশোধনী তালিকার ক্ষেত্রে ২৩/১২/২০১৪ তারিখে অতিক্রান্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে অনেক দাবিদার দাবি করতে পারছেন না।
(ঘ) বিদ্যমান আইনের ধারা ১৮ এর উপধারা (৪) অনুযায়ী সিদ্ধান্ত বা রায় প্রদানের ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মধ্যে আপিলের বিধান রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিলম্বে রায় দেওয়ায় বা আদেশের সার্টিফায়েড কপি বিলম্বে প্রদান করায় আইন অনুযায়ী ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মধ্যে আপিল করা সম্ভব হয় না।
(ঙ) বিদ্যমান আইনের ধারা ২৬ এর বিধান অনুযায়ী অদাবিকৃত এবং দাবি অপ্রমাণিত সম্পত্তিকে সরকারি সম্পত্তি বলা হয়েছে। কিন্তু ওই সরকারি সম্পত্তির রেকর্ড সংশোধন ও নিষ্পত্তির বিষয়ে স্পষ্ট বিধান নেই।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের আইন শাখার অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ সালেহউদ্দীন-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আজকের কর্মশালায় ঢাকার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, সহকারী কমিশনার (ভূমি), ভিপি কৌঁসুলি, অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তারা অংশ নেন। ১৯ জন অংশগ্রহণকারী চারটি পৃথক দলে ভাগ হয়ে অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক উপর্যুক্ত পাঁচটি সমস্যার সমাধান প্রস্তাব তৈরি ও উপস্থাপনা করেন।
১৯৬৫ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে যেসব লোক পাকিস্তান ত্যাগ করে ভারতে গিয়ে বসবাস করছিল তাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার শত্রু সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৭৪ সাল থেকে শত্রু সম্পত্তির নতুন নাম দেওয়া হয় অর্পিত সম্পত্তি। অর্পিত সম্পত্তি হিসাবে তালিকাভুক্ত সম্পত্তিসমূহ বৈধ মালিকদের কাছে প্রত্যর্পণের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের জটিলতা নিরসনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রথম মেয়াদে ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, ২০০১’ প্রণয়ন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪,২০২১
জিসিজি/এমজেএফ