ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত কিশোরী মুক্তা

সাগর ফরাজী, সাভার করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২১
দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত কিশোরী মুক্তা সাদিয়া আক্তার মুক্তা

সাভার (ঢাকা): তিন বছর ধরে দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছে সাদিয়া আক্তার মুক্তা (১৫) নামে এক কিশোরী। শৈশব কাটিয়ে কৈশোরে পা বাড়ানোর আগেই যেন শেষ হয়ে গেছে তার সব।

নবম শ্রেণিতেই থমকে গেছে মুক্তার পড়াশোনা। প্রতিনিয়ত তার চোখ, নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত ঝরে। মুক্তার এমন অবস্থায় অসহায় হয়ে পড়েছে তার পরিবার। শেষ সম্বল জমি বিক্রি করে দুই বছরের বেশি সময় ধরে মেয়ের চিকিৎসা করিয়েছেন। তাও সুস্থ হয়ে ওঠেনি মুক্তা। শেষমেষ দেশের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে বলেছেন চিকিৎসকরা। এখন উপার্জনের স্বল্প টাকায় মেয়ের চিকিৎসা করাতে চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন মুক্তার বাবা মাসুদ রানা।

সাভার উপজেলার তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নে দক্ষিণ শ্যামপুর গ্রামে বসবাস মুক্তার পরিবারের। ০৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে মুক্তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও সে কথা বলতে পারেনি। পরে কথা হয় তার বাবার মাসুদ রানার সঙ্গে।  

তিনি জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি নাটোর জেলার সদর থানার হয়বতপুরে। মুক্তা তার মেঝো মেয়ে। এছাড়া তার আর একটি মেয়ে ও আট মাস বয়সী ছেলে রয়েছে। মুক্তার মা আগে পোশাক কারখানায় কাজ করলেও এখন গৃহিণী। তাদের পরিবারে তিনি একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। সাভারে স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের পোশাক কারখানায় বয়লার অপারেটর হিসেবে কাজ করেন তিনি। মাত্র ১৬ হাজার টাকা বেতনে পরিবারের ভরণপোষণ ও মুক্তার চিকিৎসা ব্যয় চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি।

মাসুদ রানা বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৮ সালের ১১ আগস্ট সড়ক দুর্ঘটনায় আমার ডান পা ভেঙে যায়। এ কষ্ট সহ্য করতে না পেরে ২৪ আগস্ট স্ট্রোক করে মুক্তা। তখন মুক্তার বয়স ১৩ বছর। মুক্তার অসুস্থতা ক্রমশ বাড়তে থাকে, এক সময় মুখ দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে তার। তারপর নাক দিয়ে। এরকম করতে করতে এখন দুই চোখ, মুখ ও নাক দিয়ে রক্ত ঝরে।  

মুক্তার বাবা বলেন, হঠাৎ মুক্তা বমি করতে শুরু করে। এরপর নাক, মুখ, চোখ দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে। দিনে তিন-চার বার রক্ত ঝরে। কখনো একবার এবং সঙ্গে রক্ত বমিও করে। রক্ত পড়ার সময় চোখ জ্বালাপোড়া করে। নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। একদম মারা যাওয়ার উপক্রম হয়ে যায়। বমি যতক্ষণ বন্ধ না হয় এতক্ষণ রক্ত পড়তেই থাকে। বমির প্রেসার হলেই রক্ত বেশি পড়ে।

তিনি আরো বলেন, আমার সাধ্য অনুযায়ী সব জায়গায় গেছি। ঢাকা নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল, শ্যামলি বক্ষব্যাধি, জাতীয় নাক-কান-গলা, এনাম মেডিক্যাল, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজেও দেখাইছি। সবশেষ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক মাস রাখছি। পরে ডাক্তাররা ভারতে নিয়ে যেতে বলেছে। ভারতে নিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য আমার নেই। আমার সামান্য বেতনে কি করবো ভেবে কুল পাচ্ছি না। ওর চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ হইছে। আমার সর্বস্বই শেষ হয়ে গেছে। এখন কমপক্ষে লাখ দুয়েক টাকা হলে মুক্তাকে আমি ইন্ডিয়া নিয়ে যেতে পারতাম। আমার মেয়ে সুস্থ হোক এতটুকু পেলেই আমার জন্য যথেষ্ট।

মেয়ের চিকিৎসার জন্য সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন মুক্তার বাবা মাসুদ রানা।
যোগাযোগ: মাসুদ রানা, 01718-651980 (বিকাশ), ব্র্যাক ব্যাংক ইপিজেড শাখা, সাভার, আশুলিয়া।
হিসাব নং - 1508201964164001

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।