হবিগঞ্জ: মামলা দায়েরের একদিন পরই হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় জুবাইল মিয়া (১৮) হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা জানিয়ে তিনজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টা থেকে রাত সোয়া ১১টা পর্যন্ত হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম আসামিদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। আসামীরা হলেন- লাখাই উপজেলার মনতৈল গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে কাইয়ুম মিয়া (২৭), একই গ্রামের আব্দুল আলীর ছেলে শিপন আহমেদ কাদের (১৬) ও রাঢ়িশাল গ্রামের শাহীন মিয়ার ছেলে হাফিজুল ইসলাম (২৬)।
নিহত জুবাইল মিয়া মনতৈল গ্রামের আছকির মিয়ার ছেলে এবং পেশায় কৃষক। স্বীকারোক্তি প্রদানকারী কাইয়ুম ও শিপন জুবাইলের প্রতিবেশী এবং হাফিজুল তাদের পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দা। হাফিজুলের নেতৃত্বে এলাকায় একটি কিশোর গ্যাং পরিচালিত হয়।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ বাংলানিউজকে জানায়, নিহত জুবাইলের সঙ্গে তার পার্শ্ববর্তী ২২ বছর বয়সী এক তরুণী গৃহবধূর পরকিয়ার সম্পর্ক ছিল। মেয়েটি সাত মাসের অন্তসত্ত্বা। একই তরুণীর সঙ্গে পরকিয়ার সম্পর্ক ছিল হাফিজুলেরও। সম্পর্কের মাঝ থেকে জুবাইলকে সরিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যেই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন হাফিজুল।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৯ জানুয়ারি রাতে হাফিজুল, শিপন ও কাইয়ুমসহ কয়েকজন মিলে গ্রামের ওয়াজ মাহফিল থেকে জুবাইলকে বের করে আনেন। একটি দোকানে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে পথেই জুবাইয়েলের গলায় গামছা পেছিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়। পরে তার মাথায় এবং কানে ছুরিকাঘাতও করে। হত্যার পর মরদেহ একটি পুকুরে ফেলে রাখা হয়েছিল।
সাতদিন নিখোঁজ থাকার পর গত ৫ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় লোকজন একটি পুকুরে জুবাইলের মরদেহ দেখতে পান। ওইদিনই খবর পেয়ে লাখাই থানা পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। পরদিন জুবাইলের বাবা বাদী হয়ে লাখাই থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন।
লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, হাফিজুলের নেতৃত্বে এলাকায় একটি কিশোর গ্যাং পরিচালিত হয়। তার পরকিয়া প্রেমিকার সঙ্গে জুবাইলের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্ক থেকে সরিয়ে নিতেই হাফিজুলের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা জুবাইলকে হত্যা করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২১
এমএইচএম