ঢাকা: রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় মহাখালী থেকে সাতরাস্তাগামী ব্যস্ত সড়কের একটি অংশ এবং সড়ক সংলগ্ন ফুটপাত দখল করে রাখা হয়েছে ডাম্পিং করা যানবাহন।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার সামনেই এবং ফায়ার সার্ভিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ জরুরি সেবা প্রদানকারী সংস্থার কার্যালয়ের খুব কাছেই ফেলে রাখা হয়েছে যানবাহনগুলো।
মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে ডাম্পিং যানবাহন ফেলে রাখায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় পথচারী এবং যানবাহন চালকদের।
শিল্পাঞ্চল এলাকা হওয়ায় আশেপাশের বিভিন্ন কারখানা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত পেশাজীবীদের একটি বড় অংশ প্রধান সড়ক সংলগ্ন এই ফুটপাতটি ব্যবহার করেন। একই সাথে অফিস সময়ে প্রধান সড়কেও যানবাহনের ব্যাপক চাপ থাকে।
স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ফাতেমা রশীদ বলেন, সামনের সিগনালে (র্যাঙ্গস ফ্লাইওভার-তেজগাঁও মোড়) জ্যাম থাকলে বাস থেকে একটু আগেই নেমে যাই। এরপর এই ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যেতে হয়। দুইটা ট্রাকের মাঝ দিয়ে যেতে হয়। সন্ধ্যার দিকে হলে খুব ভয় লাগে। সাথে সহকর্মী বা পরিচিত কেউ থাকলে পাশাপাশি হেঁটে যাওয়া যায় না। একজন একজন করে যেতে হয়।
মহাখালী থেকে তেজগাঁও মোড়গামী সড়কে চলা একটি প্রাইভেট কারের চালক ফজলে রাব্বি বলেন, ট্রাকটি এমনভাবে রাখা যে দূর থেকে দেখলে মনে হবে এটি সড়ক চলমান ট্রাক। একদিন আমি সিগনালে এই ট্রাকের পেছনে দাঁড়িয়েছিলাম। সিগনাল ছাড়লে ডান পাশ থেকে অনেক গাড়ি যাচ্ছে কিন্তু ট্রাক আর যায় না। পরে গাড়ি থেকে নেমে দেখি এটা ডাম্পিং ট্রাক। পরে অনেক কষ্টে গাড়ি পেছনে নিয়ে বের হয়েছি।
জানা যায়, শিল্পাঞ্চল থানার বিভিন্ন মামলায় ডাম্পিং করা এসব যানবাহন এখানে ফেলে রাখা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে মালামালবাহী বড় দুটি কাভার্ড ভ্যান ও আরও কয়েক ধরনের যানবাহন রয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার শীল জানান, এসব যানবাহন বিভিন্ন মামলার আলামত। এগুলো রাখার জায়গা নিয়েও আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। পাশেই কলোনি বাজারের পেছনে একটি মাঠ আছে। আমরা মাঝে মাঝে অনুরোধের ভিত্তিতে সেখানে কিছু যানবাহন রাখি। আমি এই থানায় নতুন এসেছি। যানবাহনগুলোর বিষয়ে কী করা যায় দেখছি।
যে সড়ক ও ফুটপাতের উপর যানবাহনগুলো রাখা সেগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) অবশ্য একরকম ‘দেখেও না দেখা’র ভান করে আছে। ডিএনসিসির অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। প্রতিবেদকের পরিচয় দিয়ে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তার কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২১
এসএইচএস/এমজেএফ