ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পোড়াদহ মেলায় ৬৫ কেজির বাঘাইড়ের দাম ৯৭ হাজার

কাওছার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২১
পোড়াদহ মেলায় ৬৫ কেজির বাঘাইড়ের দাম ৯৭ হাজার পোড়াদহ মেলায় বিশাল আকৃতি বাঘাইড়। ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: বগুড়ার বিখ্যাত পোড়াদহ মেলা মানেই বিশাল আকৃতির, বিভিন্ন প্রজাতির মাছের মেলা। প্রতিবছর এই মেলাকে কেন্দ্র করে জমে ওঠে মাছের বাজার।

ব্যতিক্রম হয়নি এবারও। মেলার প্রথম দিনেই সবার নজর কেড়েছে ১ মণ ২৫ কেজি ওজনের বিশাল এক বাঘাইড়। যেটির দাম হাঁকা হয়েছে ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা। আব্দুল্লা আল আজাদ নামে একজন ক্রেতা মাছটির ৬০ হাজার টাকা দাম তুললেও দিতে রাজি হননি বিক্রেতা শুকরা সাকিদার। অপরদিকে ৪৫ কেজি ওজনের আরেকটি বাঘাইড়ের দাম হাঁকা হয়েছে ৬৭ হাজার টাকা। মাছটি কিনতে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকিয়েছেন জোব্বার শেখ নামে এক ক্রেতা। বিক্রেতা লাল মিয়া ৬৭ হাজার টাকার কমে মাছটি বিক্রি করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলায় এসে দেখা মেলে বড় এসব মাছ।

সরেজমিনে দেখা যায়, পোড়াদহ মেলা প্রাঙ্গণে কয়েকশো খুচরা মাছ বিক্রেতা এসেছেন। সারিবদ্ধভাবে এসব ব্যবসায়ী দোকান বসিয়েছেন। দোকানে মাঝারি, ছোট বিভিন্ন জাতের মাছের পসরা সাজিয়ে বসেছেন তারা। মেলার পূর্বপ্রান্তে উত্তর-দক্ষিণে লম্বালম্বিভাবে বসেছেন একাধিক দোকানি। তাদেরই একজন শুকরা সাকিদার। তিনি সিরাজগঞ্জ যমুনা নদীতে ধরা পড়া ৬৫ কেজি ওজনের একটি বাঘাইড় মাছ এ মেলায় বিক্রি করতে এনেছেন। বিশাল আকারের এ মাছটি দেখতে সকাল থেকেই ভিড় করছেন ক্রেতা সাধারণের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা। ক্যামেরায় মাছের ছবি ধারণ করছেন তারা। লাল মিয়ার দোকানে গিয়েও দেখা যায় একই দৃশ্য।

বিক্রেতা শুকরা সাকিদার বাংলানিউজকে জানান, তিনি প্রতিবছর এ মেলায় বড় বড় মাছ নিয়ে আসেন। এখানে বড় আকারের মাছ বেশি বিক্রি হয়। ক্রেতারা দামাদামি করলেও তারা বড় আকারের মাছ কিনতেই বেশি পছন্দ করেন। তাই এবারো তিনি বিভিন্ন জাতের বড় মাছ এ মেলায় উঠিয়েছেন। এরমধ্যে বাঘাইড় মাছটি এ মেলার সবচেয়ে বড় মাছ। তিনি জানান, ১ হাজার ৫শ টাকা কেজি হিসেবে মাছটির দাম হাঁকিয়েছেন ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা। সকাল বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বেশ কয়েকজন ক্রেতা মাছটি কিনতে দাম হাঁকিয়েছেন। এরমধ্যে একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা দাম বলেছেন।

আপেল মাহমুদ, আতিকুর হাসান, জিন্নাসহ একাধিক মাছ বিক্রেতা বাংলানিউজকে জানান, ঐতিহ্যবাহী এ মেলায় রুই, কাতলা, মৃগেল, গাঙচিল, চিতল, বোয়াল, হাঙড়ি, গ্রাসকার্প, সিলভার কার্প, বিগহেড, কালিবাউশ, পাঙ্গাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাঝারি ও বড় আকারের মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এসব মাছ ওজনে ৫-২০ কেজি পর্যন্ত।

তারা জানান, প্রতিকেজি রুই বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৫০০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৬০০, মৃগেল ২৫০-৩০০, গাঙচিল ৩০০, চিতল ৩০০-৫৫০, বোয়াল ৬০০-১২০০, হাঙড়ি ২০০-৪০০, গ্রাসকার্প ২৫০-৩৫০, সিলভার কার্প ৩০০-৩৫০, বিগহেড ২৫০-৪০০, কালিবাউশ ২৫০-৪০০, পাঙ্গাস ১৫০-৪০০ টাকা।

তাজউদ্দিন শেখ, সালাম মিয়া, একরামুল কবির, শাজাহান আলীসহ মেলায় আসা কয়েকজন ব্যক্তি বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছর আমরা এ মেলায় মাছ কিনতে আসি। এবারো এসেছি। এদের মধ্যে শাজাহান আলী ১২ কেজি ওজনের একটি গ্রাসকার্প মাছ কিনেছেন।

মেলার স্থান পরিবর্তন হওয়ায় আগের মতো বড় আকারে মেলাটি হচ্ছে না। আগে গোলাবাড়ি-সারিয়াকান্দি সড়কের আগে বসতো এ মেলা। কিন্তু গেলো কয়েক বছর ধরে এ মেলা বসছে রাস্তার পশ্চিমে। বিগত বছরগুরোর তুলনায় এবার মাছও কম বলে মন্তব্য করেন মেলার মাছ কিনতে আসা অনেক ক্রেতা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২১
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।