বগুড়া: বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ বউমেলা জমে উঠেছে। মেলায় আনন্দ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনেকে দলবেঁধে আবার কেউবা দলছুট হয়ে ঘোরাঘুরি করছেন।
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলায় আসা নারীদের কর্মকাণ্ড চোখে পরে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মেলার দোকানে দোকানে গিয়ে বিভিন্ন জিনিস নেড়েচেড়ে দেখছিলেন তারা। খেলনা ও রকমারি কসমেটিক ছিল তাদের কেনাকাটার তালিকায়। পছন্দের পণ্য চোখে পড়ামাত্র শুরু হয়ে যায় দর কষাকষি। দামে মিললে দোকানিকে টাকা বুঝিয়ে দিয়ে পছন্দের পণ্যটি হাতে তুলে নেন। এভাবে বউমেলায় চলে বউদের কেনাকাটা।
বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এ স্থানে বসেছে মেলা। মেলার প্রথম দিনের বেচাকেনায় প্রাধান্য পেয়েছিল মাছ ও মিষ্টিসহ বিভিন্ন সামগ্রী। তবে সেখানে সিংহভাগ ক্রেতা-বিক্রেতাই পুরুষ। পরদিন একইস্থানে সকাল থেকে শুরু হয় বউমেলা। চলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত। আর এ মেলার ক্রেতা-বিক্রেতা শুধুই নারী। তবে সীমিত সংখ্যক দোকানে পুরুষ বিক্রেতাকেও দেখা যায়। ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা শুরু হওয়ার পর থেকেই চলে আসছে এ রীতি। এমনটাই জানা যায়। মাছের মেলা শেষ হওয়ার পর রাতের মধ্যেই খেলনা ও কসমেটিক দোকানিরা ব্যবসায় অনেকটা পরিবর্তন আনেন। নারীদের সাজ-সজ্জার রকমারি পণ্য দিয়ে ভরে তোলেন দোকানগুলো।
মেলায় বাহারি ডিজাইনের কসমেটিক সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে দোকানে বসেন নারী দোকানিরা। খেলনা সামগ্রীর দোকানগুলোর চিত্রও ছিল প্রায় একই রকম। এসব দোকানে ছিল নারীদের উপচেপড়া ভিড়। পাশাপাশি কিশোরী, তরুণী ও উঠতি বয়সের মেয়েরাও কেনাকাটায় পিছিয়ে ছিল না। দুপুরের মধ্যে মেলা প্রাঙ্গণ বিভিন্ন বয়সী নারীদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে।
মেলায় আসা সানজিদা বেগম, আয়শা, দোলা, এমিসহ কয়েকজন নারী বাংলানিউজকে জানান, মেলায় প্রথমদিন প্রচন্ড ভিড় থাকে। এদিন মাছ-মিষ্টি বেচা-বিক্রিতে লাখো মানুষের ঢল নামে। যাদের সিংহভাগই পুরুষ। এ কারণে মেলায় যাওয়া হয়ে ওঠে না। পরদিনের মেলা শুধুই নারীদের জন্য বলে নারীদের উপস্থিতিটাই মুখ্য।
তারা জানান, বউমেলায় পুরুষ মানুষ আসেন না। মেলার রীতি অনুযায়ী এদিন মেলায় পুরুষদের আসতে মানা। তাই নারীদের জন্য সুবিধা হয়। তারা মেলায় আসেন। ঘোরাঘুরি করেন। স্বজনের সঙ্গে গল্প করেন। আড্ডা দেন। সঙ্গে পছন্দের প্রিয় জিনিসগুলো কেনেন।
রিমা আক্তার, তৃশা, মরিয়ম, জাকিয়া সুলতানা বাংলানিউজকে জানান, এ মেলা থেকে প্রতিবছর তারা বিভিন্ন কসমেটিক ও ইমিটেশন সামগ্রী কেনেন। পাশাপাশি ছোটদের জন্য খেলনা ও সাংসারিক প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়, এমন সব জিনিসপত্রও কেনা হয়। বিশেষ করে মেলায় আসা নাগরদোলা, হোন্ডা খেলা তাদের বেশ প্রিয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২১
কেইউএ/এমআরএ