খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। নির্বাচন ঘিরে পাহাড়ি এই জনপদে জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা।
চলছে প্রার্থীদের উঠান বৈঠক। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে মন জয় করার চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা। পোস্টারে ছেয়ে গেছে শহর। নির্বাচন নিয়ে দৃশ্যত উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করলেও অতীত অভিজ্ঞতার কারণে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন ভোটাররা।
এবার মেয়র পদে মোট তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে রয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় কিছুটা বেকায়দায় থাকলেও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সন্দিহান প্রকাশ করেছে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী।
তারা জানান, ভোটাররা নিশ্চিন্তে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারলে তারা জয় পাবেন। এদিকে আসন ধরে রাখতে মরিয়া আওয়ামী লীগ। জেলা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
এবারও নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. শামছুল আলম, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন শাহজালাল কাজল এবং মোবাইল প্রতীকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম।
২৫ দশমিক ৫ বর্গ কিলোমিটারের বিশাল আয়তনের মাটিরাঙ্গা পৌরসভার গত নির্বাচনের দুঃসহ স্মৃতি রয়েছে। ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের দিন প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন উপজেলা কৃষকলীগের সিনিয়রসহ সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম। এরপর পাল্টাপাল্টি হামলা ও নির্যাতনের একাধিক ঘটনা ঘটে। যা সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তাই ভোটারদের চাওয়া – যাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে এখনো মাটিরাঙ্গায় আশানুরূপ উন্নয়ন না হওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মো. শামছুল হক জানান, আমি যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি পৌরসভার উন্নয়ন করার। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। বিদ্রোহীপ্রার্থী নিয়ে তিনি বলেন, দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া হলো প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে অমান্য করা। জনগণ উন্নয়ন চায়। তারা নৌকাকে ভোট দেবে বলে আমার বিশ্বাস।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীপ্রার্থী এম এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অযোগ্য নীতি, চরিত্রহীন ব্যক্তিকে মূল্যায়ন করে তৃণমূল মতামতকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। যা দলের জন্য ক্ষতি হয়েছে। আমি মাটিরাঙ্গাবাসীর ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য প্রার্থী হয়েছে।
দলে এখনো ত্যাগী ও সততার মূল্যায়ন নেই বলেও জানান তিনি। মানুষ নীরবে তার নির্বাচনী প্রতীকে মোবাইলে ভোট বিপ্লব করবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মো. শাহজালাল কাজল। তিনি বলেন, আমার দলের নেতাকর্মীদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। সরকারি দলের লোকজন আচরণবিধি লঙ্ঘন করেও প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। প্রভাবমুক্ত নির্বাচন নিয়ে আমরা সন্দিহান। ইতিমধ্যে আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছি।
ভোট অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত হলে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয় হবেন বলে তিনি দাবি করেন। তবে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ধানের শীষের জয় নিশ্চিত বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২১
এডি/জেআইএম