ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভালোবাসায় রাঙা থাক জীবন

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২১
ভালোবাসায় রাঙা থাক জীবন ভালোবাসায় রাঙা থাক জীবন, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বসন্ত অথবা ভালোবাসা দিবস। উপলক্ষ যাই হোক না কেন, উদ্দেশ্য প্রিয় মানুষটির সঙ্গে হাতে হাত রেখে একসঙ্গে পথ চলা।

চলার পথটাকে আরও সুন্দর করে রাঙিয়ে তোলা। তাইতো যত আয়োজন। সে আয়োজনে শামিল ছোট্ট শিশু থেকে জীবনের শেষ প্রান্তে দাঁড়ানো মানুষটিও।

বাতাসের গুনগুনানিতে ভালোবেসে সে কথাটিই একটি উপলক্ষ খুঁজে নিয়ে প্রিয় মানুষটিকে বলে দেওয়া। নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে বেরিয়ে প্রিয় মানুষের সঙ্গে একটু ভালো সময় কাটানো। সে কাজটিই সহজ করে দেয় যে দিনটি, তা ভালোবাসার দিন, প্রিয় বসন্তের দিন। এমনটাই ভাবনা ভালোবাসাকে বাঁচিয়ে রাখা মানুষগুলোর।

রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পহেলা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে তাই রাজধানীবাসীর বড় একটি অংশ ভোর থেকেই জমায়েত হন রমনা পার্ক অথবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। রঙে রঙিন হয়ে ঋতুরাজ বসন্তকে তারা যেমন বরণ করে নিয়েছেন, তেমনি উদযাপন করছেন বিশ্ব ভালোবাসা দিবস।

ঐতিহ্যের সঙ্গে ভালোবাসার মিশেলে তাইতো বাঙালি বলতে পারে ভালোবাসার জন্য ধরা বাধা কোনো নিয়ম বা দিন থাকে না। তবুও এ দিনটি যেমন বসন্তের প্রথম দিন, তেমনি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। মহামারির একটি বছর ঘরবন্দি জীবনে সব রঙই তো প্রায় হারিয়ে গেছে জীবন থেকে। কী দুঃসহ দিন গেছে আমাদের। সেই করোনা ভাইরাস এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তাই প্রিয় মানুষটিকে সঙ্গে নিয়ে এখন রঙিন হওয়ার সময়।

এ প্রসঙ্গে রাজধানীর বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, ভালোবাসার জন্য আলাদা কোনো দিন ক্ষণ লাগে না, একটি সুন্দর মুহূর্তই যথেষ্ট। তবে ভালোবাসা দিবস আর বসন্ত আজ একসঙ্গে। এ যেন এক স্বপ্নীল দিন।

সকালে পরিবার নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন রাজধানীর আরেক নাগরিক আতিকা রহমান। নিজের ছোট্ট শিশুটির মাথায় রঙিন ফুলের মুকুটের সঙ্গে বসনে যেমন দিয়েছেন বাসন্তী সাজ, তেমনি রাঙিয়েছেন নিজেদেরও।  

কথা হলে তিনি বলেন, প্রতিবছরই বসন্ত উৎসব ও ভ্যালেন্টাইনে কাজের ফাঁকে আমরা দিনভর ঘুরে বেড়াই। নিজেদের একসঙ্গে পথচলার দিনগুলোর কথা নতুন করে মনে করি। আমার কাছে এ বসন্ত তাই ভীষণ দামি।

প্রতিবছরই বসন্তে ফুলে ফুলে রঙিন হয়ে ওঠে রমনা পার্ক। উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আর করোনার কারণে এবার তা অনেকটাই জনশূন্য। তবে ভালোবাসা তো ভালোবাসে দৃষ্টান্ত সৃষ্টিতে। তাই সোহরাওয়ার্দী বা রমনা, এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় এদিন ছুটে বেড়িয়েছেন সবাই। বছরের একটি দিনকে একটু আলাদাভাবে ভালোবেসে উদযাপন করেছেন তারা।

শাহবাগের ফুলের দোকানগুলোর কর্মীদেরও নিস্তার নেই এতটুকু। গ্ল্যাডিওলাস, জারবেরা, গাঁদা, গোলাপ, রজনীগন্ধা ফুলের যে ভীষণ চাহিদা। একগুচ্ছ ফুলে মুকুট চড়ছে নারীদের মাথায়, তারা খোঁপায় গুজেছেন রঙিন ফুল।

দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বসন্ত উৎসব উদযাপন শেষে শাহবাগে ফুলের দোকানে কথা হয় উত্তরা-৪ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা রাতুল ইসলাম ও কনিকা দম্পতির সঙ্গে।  

রাতুল ইসলাম বলেন, প্রিয় মানুষটিকে একগুচ্ছ ফুল উপহার দিলাম। আজ দু’জন ঘুরব, সিনেমা দেখব, আর বন্ধুদের সঙ্গে বৈকালিক আড্ডা তো আছেই।

বাংলাদেশে নব্বইয়ের দশক থেকে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উদযাপিত হতে থাকে। ১৩ ফেব্রুয়ারি পহেলা ফাল্গুনের বসন্ত বরণ ও ১৪ ফেব্রুয়ারিতে ভালোবাসা দিবস পালনের রীতি চলে আসছে প্রায় ২৫ বছর ধরে। তবে পরিবর্তিত বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী গত বছর থেকে পহেলা ফাল্গুন উদযাপিত হচ্ছে ১৪ ফেব্রুয়ারি। ভালোবাসার জন্য নির্দিষ্ট দিনক্ষণ তো আর ঠিক করে রাখা যায় না, তবুও এ দিনটিকে তারা বেছে নেন অনেকটা ভালোবাসায়।

মহামারি করোনা ভাইরাসে গেল বছরের সব আয়োজন স্থগিত ছিল। গত এক বছরে মহামারির প্রকোপে বাংলাদেশ হারিয়েছে আট হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণ। করোনার দিনকালে ভালোবাসা দিবস তাই এবার এসেছে ভিন্ন এক আবহে। তবুও সব দুর্যোগ পেরিয়ে ভালোবাসার জয় হবে, এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২১
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।