ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মিনিটে ৪৬ ইট তৈরি করবে ফারুকের ‘সেমি অটো ব্রিকস’

শাহিদুল ইসলাম সবুজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২১
মিনিটে ৪৬ ইট তৈরি করবে ফারুকের ‘সেমি অটো ব্রিকস’ নিজের উদ্ভাবিত অটো ব্রিকসের পাশে ওমর ফারুক হিরো

জয়পুরহাট: প্রকৌশলী না হয়েও জয়পুরহাটের ওমর ফারুক হিরো নামে এক যুবক মিনিটে ৪৬টি ইট তৈরির সেমি অটো ব্রিকস মেশিন (স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র) তৈরি করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।  

শ্রমিক সংকটের এই বাজারে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফারুকের উদ্ভাবিত যন্ত্রটি এক নজর দেখার জন্য প্রতিদিনই তার বাড়িতে ভিড় করছেন মানুষজন।

হিরো জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের দুর্গাদহ বাজার সংলগ্ন কান্দি গ্রামের মুকুল হোসেন ও রেখা বেগমের ছেলে।  

উদ্ভাবক ওমর ফারুক হিরো বাংলানিউজকে বলেন, ২০০০ সাল থেকে বেশ কয়েক বছর আমি পাওয়ার ট্রলি চালিয়ে ভাটায় ইট বহনের কাজ করতাম। তখন ভাটায় অনেক সময় শ্রমিক সংকটে কাজ ব্যাহত হওয়ার দৃশ্য লক্ষ্য করতাম। এ অবস্থায় ২০১৭ সাল থেকে স্বল্প সময়ে এবং কম খরচে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইট তৈরির স্বয়ংক্রিয় একটি যন্ত্র বানানোর চেষ্টা শুরু করি। অবশেষে মিনিটে ৪৬টি ইট তৈরির স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রটি উদ্ভাবনে সফলতা অর্জন করি।  

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমার তৈরি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রটি সাড়ে ৭ লাখ টাকায় বিক্রি হয়ে গেছে। আর এটি কিনে নেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের সরকার ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী মুকুল সরকার।

এ বিষয়ে উদ্ভাবক হিরো আরও বলেন, ইট তৈরির স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রটি সফলভাবে প্রস্তুত করার পর দীর্ঘ দিনের কষ্ট ভুলে মনে প্রশান্তি পেয়েছি। যন্ত্রটির ৫০ হর্স পাওয়ার মোটর এবং ইলেকট্রিক মোটরেও চলতে সক্ষম। ভাটাগুলোতে সনাতনী পদ্ধতিতে একটি ইট বের হতে যেখানে শ্রমিক খরচ লাগে ৮০ পয়সা, সেখানে এই যন্ত্র দিয়ে মাত্র ৪০ পয়সার মতো খরচ পড়ে। এছাড়াও বেশি শ্রমিকের দরকার পড়ে না। অন্যদিকে যন্ত্রটি দিয়ে সঠিক পরিমাপ অনুযায়ী ইট তৈরি হয়, যেখানে ক্রেতাদের প্রতারণার হওয়ার সুযোগ নেই।

নিজের উদ্ভাবিত অটো ব্রিকসের পাশে ওমর ফারুক হিরো

সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে যন্ত্রটি দেখতে হিরোর বাড়িতে গেলে দেখা যায়, এটি এক নজর দেখার জন্য ছোট-বড় সব বয়সী কৌতুহলী মানুষের ভিড়। হিরো যন্ত্রটি স্টার্ট করে এবং ইট বানিয়ে সবাইকে দেখাচ্ছিলেন। সে সময় স্থানীয় নাসির রাজু, তামিম ইকবাল স্বপনসহ অনেকেই বাংলানিউজকে জানান, ওমর ফারুক হিরোর এ রকম একটি আবিস্কারে তারা গর্বিত।  

এ বিষয়ে ভাদসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সরোয়ার হোসেন স্বাধীন বাংলানিউজকে বলেন, ওপর ফারুক হিরো আমার ইউনিয়নের সত্যিকারেই একজন হিরো। স্বল্প পরিসরে লেখাপড়া জানা একজন যুবক সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে যে যন্ত্রটি উদ্ভাবন করেছেন, তা সত্যিই সবাইকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। আমরা তার সাফল্য কামনা করছি।  

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২১
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।