ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা করা পুত্রবধূকে উপহার দিচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২১
শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা করা পুত্রবধূকে উপহার দিচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তা

টাঙ্গাইল: শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা করলেই উপহার পৌঁছে দিচ্ছেন টাঙ্গাইলের এক পুলিশ কর্মকর্তা। এমনই এক ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছেন টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন।

তিনি নিজে গিয়ে উপহার পৌঁছে দিচ্ছেন। উপহারের মধ্যে রয়েছে টাঙ্গাইলের তাঁত শাড়ি, পোড়াবাড়ির চমচম ও ক্রেস্ট। সেই সঙ্গে পরিবারকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।

টাঙ্গাইল সদর থানায় প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে একটি ফেস্টুন। সেটিতে লেখা ছিলো ‘বৃদ্ধাশ্রম নয়, পরিবারই হোক বাবা-মায়ের নিরাপদ আবাস’। পুত্রবধূ যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে তার শ্বশুর-শাশুড়ির খেদমত করেন আল্লাহ তাকে আখিরাতে পুরস্কার দেবেন। সেখানে আরও লেখা ছিলো শ্বশুর-শাশুড়িকে যে সেবা যত্ন করবে এবং একসঙ্গে বসবাস করবে সেই ভাগ্যবতীকে পুরস্কৃত করা হবে এবং যোগাযোগের জন্য ফোন নম্বর উল্লেখ্য করা ছিলো।

মাহমুদা আক্তার নামের এক নারী বাংলানিউজকে জানান, তিনি পুরস্কার পেয়েছেন। পুরস্কার পেয়ে নিজের প্রতি আরও আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে। তিনি তার শ্বশুর-শাশুড়িকে সেবাযত্ন করেন। ভবিষ্যতেও একই রকম তাদের সেবা করে যাবেন।

মাহমুদার শ্বশুর কাজী মুজিবুর রহমান বাংলানিউকে বলেন, আমার মেয়ে আমাকে যেমন ভালোবাসে, আমার ছেলের বউও ঠিক তেমনি ভালোবাসে। আমাদের দেখভাল ও সেবাযত্নে কোনো ত্রুটি করে না। এমন ছেলের বউ পেয়ে আমরা সত্যিই ভাগ্যবান।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমার ছেলে-ছেলের বৌ আমাদের সাধ্য অনুযায়ী সেবা করে। একজন পুলিশ অফিসার আমার বৌমাকে পুরস্কৃত করেছেন। পুরস্কার পেয়ে সে তো আত্মহারা।

টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, তিনি লক্ষ্য করেছেন বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের অবহেলায় বাবা-মা অযত্নে জীবন যাপন করেন। অনেকেই ঠিকমত খাবারও দেয় না। আর্থিক অবস্থা ভালো সন্তানেরা বাবা-মাকে ছেড়ে বউ বাচ্চা নিয়ে আলাদা বসবাস করেন। অনেক সন্তানরাই ভুলে যায় এই বাবা-মা দিনরাত পরিশ্রম করে এই সন্তানের মুখে আহার তুলে দেন এবং উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেন। তারা এও ভুলে যায় তাদের একদিন বৃদ্ধ হতে হবে। আমার উদ্দেশ্য ওই পুত্রবধূদের উৎসাহিত করা।

তিনি আরও জানান, যারা বাবা-মাকে ছেড়ে দুরে চলে যান এবং অনেকের একাধিক সন্তান থাকার কারণে বাবা-মাকে ভরনপোষণ নিয়ে ঠেলাঠেলি করে দূরে সরিয়ে দেয়। সেসব সন্তান ও পুত্রবধূর প্রতি প্রতিবাদ স্বরূপ এই আয়োজন করেছি। যাতে কোনো বাবা-মাকে অবহেলা ও বৃদ্ধাশ্রমে যেতে না হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।