নোয়াখালী: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুরে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনার শিকার নারীকে ধর্ষণের মামলায় দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জয়নাল আবেদীনের আদালতে এর উপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মামুনুর রশীদ আসামিদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ পড়ে শোনান। এসময় আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। অভিযোগ গঠনের শুনানিতে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায়, আদালত তাদের কাছে বিষয়টি জানতে চান।
আসামি দেলোয়ার হোসেন আদালতকে জানান, কয়েকজন আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাদের পক্ষে কেউ দাঁড়াতে রাজি হননি। তবে একজন আইনজীবী বলেছেন, আদালত অনুমতি দিলে, তিনি দাঁড়াতে রাজি আছেন।
আদালত তার উত্তরে বলেন, এ ব্যাপারে আদালতের অনুমতির দরকার নেই। যেকোনো আইনজীবী যেকোন আসামির পক্ষে আদালতে দাঁড়াতে পারেন। তবে আদালতের পক্ষ থেকে এ মামলায় আসামির পক্ষে টেস্ট ডিফেন্স হিসেবে আইনজীবী নিয়োগ করা হবে না।
মামলায় বাদীপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন, জেলা বারের সাবেক সভাপতি মোল্লা হাবিবুর রাছুল। তাকে সহায়তা করেন, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে শাহিদা আক্তার, ও কল্পনা রানী দাশ, আয়েশা বেগম শিরিন ও ছালেহা বেগম। এ সময় আদালতে শিক্ষক ও লেখক রেহনুমা আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনার তদন্তকালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আল মাহমুদ ফয়জুল কবীরের কাছে ওই নারী অভিযোগ করেন, দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ারের হাতে তিনি এর আগে দুই বার ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তাকে ওই কাজে সহায়তা করেছে আবুল কালাম। পরে ওই ঘটনায়ও বেগমগঞ্জ থানায় ধর্ষণের মামলা করেন নির্যাতনের শিকার নারী। ওই মামলায় দেলোয়ার ও আবুল কালামের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর রাতে বেগমগঞ্জের একলাশপুর ইউনিয়নের খালপাড় এলাকায় ওই গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালায় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার, বাদল, কালাম ও আবদুর রহিম। ঘটনার ৩২ দিন পর গত বছরের ৪ অক্টোবর (রোববার) দুপুরে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, নির্যাতনকারীরা ওই গৃহবধূর পোশাক কেড়ে নিয়ে তার বিরুদ্ধে কিছু একটা বলতে থাকে। তিনি প্রাণপণে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করেন এবং হামলাকারীদের ‘বাবা’ ডাকেন, তাদের পায়ে ধরেন। কিন্তু, তারা ভিডিও ধারণ বন্ধ করেনি। বরং হামলাকারীদের একজন তার মুখমণ্ডলে লাথি মারে ও পা দিয়ে মুখসহ শরীর মাড়িয়ে দেয়। এরপর একটা লাঠি দিয়ে মাঝে মাঝেই আঘাত করতে থাকে। এসময় ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার উল্লাস প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২১
আরএ